ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১

ইবিতে গাছ পাচার: ৪ মাসেও হয়নি তদন্ত, আহ্বায়কের অব্যাহতি

ইবি সংবাদদাতা 

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ৬ নভেম্বর ২০২৪

ইবিতে গাছ পাচার: ৪ মাসেও হয়নি তদন্ত, আহ্বায়কের অব্যাহতি

গত ১৪ জুন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) গাছের গুড়ি ও খড়ি পাচারের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পহেলা জুলাই গঠন করা এই কমিটি কোনো কাজই করেননি। বরং কমিটি গঠনের ৪ মাস আহ্বায়ক ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহের আলী অব্যাহতি নিয়েছেন।

বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে রেজিস্ট্রার দফতর বরাবর তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন বলে নিজেই নিশ্চিত করেছেন। চিঠিতে তিনি ব্যক্তিগত কারণ বলে উল্লেখ করেছেন। এদিকে ড. মেহের আলী আওয়ামীপন্থী শিক্ষক হওয়ার কারণে পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। এই কমিটিও গঠন করছিলেন তৎকালীন আওয়ামীপন্থী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম।

এ বিষয়ে ড. মেহের আলী বলেন, তদন্ত কমিটি গঠনের পর আমাদের প্রত্যয় স্কিম নিয়ে আন্দোলন  চলছিল। এর পরে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়। সবমিলিয়ে আমরা কাজ করতে পারিনি। আজ (বুধবার) আমি ব্যক্তিগত কারণে এই কমিটি থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। রেজিস্ট্রার দপ্তরে চিঠি দিয়েছি।

কমিটির অপর সদস্য আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদুর রহমান টিটুর সাথে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে কমিটির সদস্য সচিব অর্থ হিসাব বিভাগের উপ-রেজিস্ট্রার আসাদ্দুজামান বলেন, কমিটি গঠনের পর আমরা একদিন বসছিলাম। তবে বিভিন্ন আন্দোলনের কারণে কাজ শুরু করা হয়নি। মেহের স্যার অব্যহতি নিয়েছে আমি জানতাম না। আহ্বায়ক না থাকলে বাকি মেম্বারদের কিছু করার নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বলেন, চিঠি এখনো হাতে পাইনি। হাতে পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুন ঈদের ছুটির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মচারী ফরিদ উদ্দীনের বিরুদ্ধে গাছেন গুড়ি ও খড়ি পাচারের অভিযোগ উঠে। পরে গত ২৫ জুন ‘নিরাপত্তা কর্মচারীর প্রটোকলে ইবির গাছ পাচার’ শিরোনামে জনকণ্ঠ অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। 

এর প্রেক্ষিতে প্রশাসনের প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার প্রমাণ মেলে। এর প্রেক্ষিতে ২৬ জুন থেকে কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা-বিধির ১২ এর ১ ধারা তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় তাকে। পরে পহেলা জুলাই তিন সদস্যের কমিটি করে প্রশাসন। কমিটিকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে না দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আনসাররা জানায়, গত ১৪ জুন আনুমানিক ভোর পাঁচটার দিকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক দিয়ে ৭-৮টি ভ্যানযোগে গাছের গুড়ি ও খড়ি পাচার হয়। এসময় আনসার সদস্যরা ভ্যান বের হতে বাঁধা দেয়। পরে ওই নিরাপত্তাকর্মচারী নিজে গিয়ে ‘ভ্যান পাসের’ ব্যাবস্থা করেন। এসময় অভিযুক্ত সেই কর্মচারী বাইকযোগে ওই স্থানে টহলের মাধ্যমে প্রটোকল দিচ্ছিলেন এমন একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বাইক নিয়ে ফটকের বাইরে ভেতরে যাওয়া আসা করছিলেন। এসময় একে একে কয়েকটি ভ্যান বের হতে দেখা যায়। সেগুলোতে কয়েকটি বড় গাছের গুড়ি আর কয়েকটিতে ছোট-বড় খড়ি ছিল। এদিকে ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের পানি জমিতে সেচের অভিযোগও আছে।

এসআর

×