ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রীদের বর্ণিল বিদায়

কাজী ফারাহ তাসফিয়া

প্রকাশিত: ২১:৫১, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্রীদের বর্ণিল বিদায়

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

ফিস্ট মানেই আনন্দ উৎসব, আড্ডা-গল্প, রঙ খেলা এবং অনেক ঘোরাঘুরি। প্রথম বর্ষের সকল শিক্ষার্থীর জন্য একটা অন্যতম আবেগের জায়গা এই ‘হল ফিস্ট’। কিন্তু এবারের চিত্র যেন ব্যতিক্রম। স্নাতকোত্তর শেষ করা বা প্রায় শেষের পথে আসা ব্যাচটি আয়োজন করেছে তাদের হল জীবনের শেষ ফিস্টের। আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল পুরনো দিনের স্মতিচারণ, পুনর্মিলনী, আনন্দ-উৎসব, একটু হৈ-চৈসহ অনেকটাই। ঠিক যেমনটা তারা করেছিলেন প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে।

ব্যাচের অনেক শিক্ষার্থী এখন পাড়ি দিয়েছেন বিদেশে কিংবা কেউ পদার্পণ করেছেন কর্পোরেট বা সরকারি চাকরির জগতে। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেকেই এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। আয়োজনে থাকতে না পারলেও দীর্ঘদিনের পুরনো সহপাঠীদের জন্য পাঠিয়েছেন স্পন্সরশিপ। শেষ সময়ের এমন আয়োজন মুগ্ধ করেছে তাদের সকলকে।
ফিস্ট শুরু হয় মেহেদি উৎসবের মধ্য দিয়ে। হলটির দুটি ব্লকের বিভিন্ন ফ্লোরে শিক্ষার্থীদের রুম বিদ্যমান। তাই তারা একটি ফ্লোরকে বেছে নিয়ে শুরু করেন ডেকোরেশনের কাজ। একে একে চলে মেহেদি দেওয়ার সিরিয়াল এবং ফ্রেম হাতে ছবি তোলারও। সকালেই শুরু হয় রঙ খেলা। সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে রঙিন হয়ে উঠে হল আঙিনা। রঙ খেলার এই আয়োজন দেখলে মনে পড়ে যাবে রবি ঠাকুরের সেই গানের কথা!

‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও-   
যাও গো এবার যাবার আগে
তোমার আপনা রাগে,
তোমার গোপন রাগে
তোমার তরুণ হাসির অরুণ রাগে
অশ্রুজলের করুণ রাগে॥’
দুপুরের খাবারের বিরতির পর দল বেঁধে সেজেগুজে তারা বেড়িয়ে পরেন প্রকৃতিকন্যা খ্যাত বাকৃবি ভ্রমণে। নিজের ক্যাম্পাস শেষবারের মতো হল জীবনের বান্ধবীদের সঙ্গে ঘুরে দেখা এবং আরও কিছু স্মৃতি সংগ্রহ করাই ছিল এই ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য। সন্ধ্যায় আয়োজিত হয় কালচারাল প্রোগ্রাম এবং র‌্যাফেল ড্র। সেই সঙ্গে সন্ধ্যার আয়োজনে অন্যতম আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন।

যার মধ্যে রাখা হয়েছিল হাঁড়িভাঙা, বিস্কুট দৌড়, বালিশ খেলা ইত্যাদি। এসব খেলাধুলার আয়োজন শিক্ষার্থীদের মনে করিয়ে দিচ্ছিল যেন সেই পুরনো প্রথম বর্ষকেই। এই আয়োজনে পিছিয়ে ছিল না খাবারের মেনুও। খিচুড়ি কিংবা কাচ্চি, অথবা চাইনিজ ফ্রাইড রাইস সবই রাখা হয়েছিল সকলের সম্মতিক্রমে।
বেগম রোকেয়া হলের ১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থীদের শেষ হল ফিস্টের অনুভূতি তুলে ধরেছেন নুসাইফা আহসান, শারমিন সুলতানা কেয়া, তানজিয়া ফারহা পিউ, সাবরিন আক্তার শিলা এবং মাশশারাত মালিহা। নুসাইফা আহসান বলেছেন, ‘আমাদের হলের ১৬-১৭ সেশনের ব্যাচ ফিস্ট কখনো হয়নি। এটাই আমাদের শেষ সুযোগ ছিল, যেহেতু এ বছরই অধিকাংশের ¯œাতকোত্তর শেষ হচ্ছে। তাই নিজেদের আবারও নতুন করে চেনা কিংবা নতুনভাবে আনন্দ উপভোগ করার জন্য এই আয়োজন করেছিল। এখানে আমরা নিজেরাই সব কাজ ভাগাভাগি করে নিয়েছিলাম। নিজেদের সময়টাকে উপভোগ করতে গিয়ে আমাদের কেবলই মনে হচ্ছিল সেই যেন ১ম বর্ষেই আছি এখনো!’
শারমিন সুলতানা কেয়া বলেন, ‘অনুষ্ঠানের প্রতিটি আয়োজনই আমার অনেক ভালো লেগেছে। তবে খেলাধুলা পর্যায়ের একটি সেগমেন্ট এমন ছিল, যেখানে আমরা যতজন ফিস্টে অংশগ্রহণ করেছি, সবার নাম লিখতে বলা হয়েছিল মাত্র ২ মিনিটে। এছাড়াও যারা এই আয়োজনে ছিলেন এবং অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।’

×