ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১

প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব সংবাদদাতা,বাকেরগঞ্জ বরিশাল।।

প্রকাশিত: ১০:০৮, ২১ অক্টোবর ২০২৪; আপডেট: ১০:১১, ২১ অক্টোবর ২০২৪

প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলাধীন গ্রামীণ জনপদের বিহারীপুর হোসাইনিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা এখন সকলের কাছেই সুপরিচিত। উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বিহারীপুর গ্রামে মাদ্রাসাটির অবস্থান। প্রতিবছরই ভালো ফলাফলে উপজেলা ছাড়িয়ে এখন জেলা জুড়ে সুনাম আর সুখ্যাতি। মাদ্রাসাটিতে যেতে চোখে পড়ে গ্রামীণ আঁকাবাঁকা অনুন্নত মেঠোপথ।  মাঠের পর মাঠ। সড়কের দুই পাশে ধান ক্ষেত আর সবুজ দুনিয়া। সড়কের দু’পাশই ছায়াবৃক্ষের রাজত্ব। 

রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে অধিকাংশ কৃষিজীবী খেটে খাওয়া মানুষ প্রতিদিনই জীবন যুদ্ধে লড়ে। কৃষকরা মাঠে মাটির সঙ্গে লড়ে সোনা ফলায়। তাদের  শ্রমে-ঘামে চলে জীবন সংসার। এক সময়ে অভাব-অনটন আর টানাপোড়া ছিল তাদের প্রতিদিনের জীবনসঙ্গী। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলাচ্ছে তাদের আশপাশ। পরিবর্তন আসছে সর্বত্রই।

কৃষি ও শ্রমজীবী গ্রামীণ ওই জনপদের মানুষগুলো তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ আর জীবন- জীবিকা নিয়ে ভাবে। এই ভাবনার শেষ নেই। বর্তমান সময়ে সব কিছুতে একটি পরিবর্তন এসেছে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষা যেন পিছিয়ে নেই। তাই তারা তাদের সন্তানদের দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান সময়ের সাথে তারা পড়ালেখায় উচ্চ শিক্ষা না নিলেও সন্তানদের এমন প্রয়োজনীয়তা খুব ভালো করে বুঝেন।

আর সেই কৃষি ও শ্রমজীবী মানুষদের চিন্তার অবসান ঘটাতে আগ্রহী হন ওই এলাকারই সু-সন্তান, শিক্ষানুরাগী, সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলহাজ্ব মাও.এ বি এম আনছারুদ্দীন। তিনি নিজ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা চিন্তা করে গ্রামীণ জনপদের অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ করে দিতে ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন 
বিহারীপুর হোসাইনিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা। 

যে মাদ্রাসায় এখন ৬৯২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ২৯ জন রয়েছেন শিক্ষক ও কর্মচারী। 

মাদ্রাসাটির কল্যানে দক্ষ মানব সম্পদ গঠন এবং কাঙ্ক্ষিত শতভাগ শতাংশের ফলাফলে অভিভূত এই ইউনিয়নে অভিভাবক ও সচেতন সমাজ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাদ্রাসাটি তার বৈশিষ্ট্য নিয়ে এগিয়ে চলছে।

রাজনীতিমুক্ত ও ধূমপানমুক্ত নির্মল পরিবেশে  আবাসিক সুবিধা সম্বলিত মাদ্রাসাটি এই এলাকার অন্ধকার দূর করে আলোর বার্তা নিয়ে এসেছে। এখন দিন যত যাচ্ছে, মাদ্রাসাটি তার শিক্ষার আলো ততই ছড়াচ্ছে। ২০২৩ সালে উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়। এরপর ২০২৪ সালে জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয় বিহারীপুর হোসাইনিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় তিন একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটি ১৯৮৪ সালে এমপিও ভুক্ত হয়। মাদ্রাসাটির দ্বিতীয় তলা মূল ভবন। এছাড়াও দ্বিতীয় ভবনটি রয়েছে একতলা। একতলা ভবনটিও জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। বর্তমানে কাঠ ও টিনের তৈরি দুটি ঘরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলেছে। বর্ষা মৌসুমে পাঠদান কক্ষের ভিতরে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে যা শিক্ষার্থীদের জন্য এখন চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলার শ্রেষ্ঠ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মাদসার একটি ভবনের জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও.মোয়াজ্জাম হোসাইন আনছারি সাহেব জানান, প্রতিষ্ঠানটির ফলাফল, মানসম্মত পাঠদান, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে রেখে সর্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে ছাত্রদের আবাসিক বোডিং এ রেখে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলায় জেলার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। মাদ্রাসায় এখন ভবন সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। অনুন্নত সড়কের কারণে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকগন চরম দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছেন। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে মাদ্রাসাটির জন্য একটি বহুতল ভবন এবং ন্যূনতম ২ কি. মি.পাকা সড়ক পেতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনাও করেন তিনি।

 

টুম্পা

×