ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১

স্বাস্থ্যখাত সংস্কার প্রায় অসম্ভব:স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৮:৪৮, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

স্বাস্থ্যখাত সংস্কার প্রায় অসম্ভব:স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

বক্তব্য রাখছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম

স্বাস্থ্যখাত সংস্কার প্রায় অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। এটিকে ভেঙে পুনরায় ঢেলে সাজাতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি)নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে ড্রিমার্স কনসালটেশন এন্ড রিসার্স আয়োজিত দুইশততম মেডিকেল ক্যাম্প উদযাপন শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।এসময় তিনি বলেন, নানান সমস্যায় জর্জরিত ছিলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আজকে ডেঙ্গু মোকাবেলায় কাজ করতে পারলে আমাদের হাসপাতালে আসতে হতো না। আমরা সেটা প্রতিরোধ করতে পারিনি। স্বাস্থ্য খাত এখন এমন পর্যায়ে এসেছে যে এখন সংস্কার প্রায় অসম্ভব। এটাকে ভেঙে পুনরায় ঢেলে সাজাতে হবে। 

 

 

 


বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা প্রদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আহতদের চিকিৎসা সহজ করতে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। দেশের ডাক্তারদের পাশাপাশি ফ্রান্স, চীন থেকে ডাক্তার এনেছি।নেপাল থেকে চক্ষু চিকিৎসক এনে চিকিৎসা করিয়েছি।তবুও অনেক রোগীর চোখ আমরা ভালো করতে পারিনি। পা হারানোদের ব্যপারে যুক্তরাজ্য, চীন ও ফ্রান্সের ডাক্তারদের সাথে যোগাযোগ করেছি। এমন একজনকে আমরা পেয়েছি যার চিকিৎসা ব্যায় প্রায় ২ কোটি টাকা। একজন বার্ন ইউনিটে আছেন যাকে অস্ট্রেলিয়া পাঠাতে ৪ কোটি টাকা খরচ হবে। এরকম অনেককে আমরা বিভিন্ন সংস্থার সাথে কথা বলে তাদের বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করছি। 


প্রক্রিয়াধীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের কাজ শেষ পর্যায়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের আগেই উচিত ছিলো দরিদ্র মানুষকে হেলথ কার্ড প্রদান করা কিন্তু সেটা করা হয়নি। দেশের স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েও এখনো শেষ হয়নি। আমি এই পদে আসীন হবার পরে আমাকে সময় দেওয়া হলো মাত্র ৮ দিন। আমি বললাম আমি এটা জানি না, আমাকে আগে জানতে হবে তারপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আজকে ২ মাস পেরিয়েছে, আমরা আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটা ক্যাবিনেটে দিতে পারবো বলে আশাবাদী। 


অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যা শুধু একাডেমিক দিকে নয় বরং একটি সমাজ এ দেশ গঠন করেছে। যখন দেশের মানুষ হতাশ হয়েছে বা বাধাগ্রস্ত হয়েছে সেখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসেছে। অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। তারই উদাহরণ এই জুলাই বিপ্লব। এই জুলাই বিপ্লবকে সফল করতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দিয়েছে। 


ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানোর দাবি করে হাসনাত আবদুল্লাহর বলেন, দেশের সর্বোচ্চ সম্মানজনক পেশার একটি হলো ডাক্তার। কিন্তু আমরা দেখে আসছি আমাদের বন্ধুরা যারা দীর্ঘদিন ধরে রাতদিন পড়াশোনা করে পাশ করার পরে এখন ইন্টার্ন করছে তারা তুলনামূলক সোশ্যাল ডিগনিটি পায় না। তাদেরকে নামেমাত্র ভাতা দেওয়া হয়ে থাকে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের তুলনায় তাদের পড়াশোনা ও পরিশ্রম অনেক বেশি হওয়া সত্বেও তাদেরকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। আমরা মনে করি, তাদের ভাতা বাড়ানো প্রয়োজন। 


বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, এই সরকারের কাছে মানুষ তার আশানুরূপ ফলাফল পায়নি। তারা এখনো মানুষকে খুশি করতে পারেনি। সাধারণ মানুষের প্রতি আমরা সুবিচার করতে পারিনি। যারা জীবন দিয়েছে বা আহত হয়েছে তাদের পরিবারের অবস্থা ঠিক করতে বা চিকিৎসা করাতে আমরা সফল হইনি। ফলস্বরূপ আমাদেরকে জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে। আশা করি সরকার অন্যান্য সংগঠনের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের আশা পূর্ণ করবে।  


অনুষ্ঠানে দেশের বন্যার রিপোর্ট পেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেডিকেল টিম লিডার আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, আমরা বন্যা কেন্দ্রীক সারাদেশে ১০৮টি ক্যাম্পের মাধ্যমে ৩০ হাজার মানুষকে সেবা দিয়েছি। দ্বিতীয় দফায় ২০টি ক্যাম্পের মাধ্যমে ১৬ হাজারের বেশি মানুষকে সেবা দেওয়া হয়েছে। বন্যার্ত এলাকায় সেবা দিতে আমরা টিএসসিতে মানুষকে ট্রেইনিং দিয়েছি, যারা বন্যাকবলিত এলাকায় সরাসরি গিয়ে সেবা প্রদান করেছেন।

ফুয়াদ

×