ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১

ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবি ছাত্রদলের 

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার 

প্রকাশিত: ১৮:৩৫, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবি ছাত্রদলের 

স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় শাখা ছাত্রদল। এসময় ভর্তি ফরমের দাম কমানোর দাবি জানান তারা। 

বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে এ বিষয়ে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানকে স্মারকলিপি দেন তারা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ তাদের এই স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির মিটিংয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষা আগামী ডিসেম্বর মাসেই অনুষ্ঠিত করার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফলাফল প্রাকাশের মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়টি সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়া ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশঙ্কা ও উৎকষ্ঠা সৃষ্টি করেছে। গত জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে অন্যান্য স্তরের শিক্ষার্থীদের মতো ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরাও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এসব শিক্ষার্থীর অনেকে এই আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন এবং অসংখ্য শিক্ষার্থী চিরতরে পঙ্গু ও মারাত্মকভাবে আহত হয়ে এখনো হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে ফ্যাসিবাদী অপশক্তি যে সহিংসতা ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তা অন্যদের মতো সদ্য এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদেরও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। এ ছাড়া, ছাত্র-জনতার অভ্যুথান-পরবর্তী সময়ে এব শিক্ষার্থীই ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। যে কারণে তাদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ফিরতে বেশ কিছু সময় লেগে গেছে। ডিসেম্বর মাসে ভর্তি-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে আহত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই এতে অংশগ্রহণের সুযোগ হতে বঞ্চিত হবেন বলে তারা আশঙ্কা করছেন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মতো প্রতিযোগিতামূলক একটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য সাধারণত একটি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি গ্রহণের যে সময় পেয়ে থাকে, আগামী ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি গ্রহণের সময়কাল সে তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যাবে- এই বিষয়ও তাদের মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। উদ্ভুত প্রেক্ষাপটে আমাদের দৃড় বিশ্বাস এই যে, ভর্তি পরীক্ষার সময়সীমা যৌক্তিকভাবে পেছানো হলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা তাদের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় সময় পাবেন এবং আহত শিক্ষার্থীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এতে অংশ নিতে পারবেন।

ভর্তি ফরমের দাম কমানোর দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ‘বিগত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০১৮-১৯ থেকে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ৫ বছরের ব্যবধানে ভর্তি-পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদন ফি শতকরা ২০০ শতাংশ বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০ টাকা নির্ধারণ করে। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বা নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের অনেকের পক্ষেই এই পরিমাণ আবেদন ফি প্রদান করে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা একটি কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। সুতরাং, পরিস্থিতি বিবেচনায় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদন ফি যথাসম্ভব হ্রাস করা এখন সময়ের দাবি।’

স্মারকলিপি প্রদানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, সহসভাপতি  আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন শাওন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আক্তার শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর আলম ভূঁইয়া ইমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

এম হাসান

×