যশোর ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজে
যশোর সেনানিবাসে অবস্থিত যশোর ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো বিজ্ঞান ও আইসিটি মেলা ২০২৪। মেলার প্রতিপাদ্য ছিল পরিবেশবান্ধব টেকসই এবং উন্নয়নশীল বিশ্ব। প্রতিপাদ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সকল শিক্ষার্থী তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে উক্ত মেলায় অংশগ্রহণ করে। প্রথম শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গ্রুপ-১, চতুর্থ থেকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গ্রুপ-২ এবং অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গ্রুপ-৩ হিসেবে মেলায় অংশগ্রহণ করে।
তিনটি গ্রুপ মিলে প্রায় ৫ শতাধিক প্রজেক্ট মেলায় স্থান পায়। প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের প্রায় সকল প্রজেক্ট ছিল সৌরশক্তি এবং গ্রিনহাউজ বিষয়ক সমস্যার সমাধান নিয়ে। গৃহস্থালির ময়লা-আবর্জনা দিয়ে পরিবেশবান্ধব বায়োগ্যাস উৎপাদন, পানির ঘনত্ব হ্রাস-বৃদ্ধির উপায়, কৃষি জমিতে পানি কম দেয়ার সেন্সর প্রযুক্তিসহ নানা ধরনের চিন্তা স্থান পায় এই গ্রুপের শিক্ষার্থীদের কাছে।
গ্রুপ-২-এর শিক্ষার্থীদের প্রজেক্টরের মধ্যে ছিল আধুনিক জীবনকে আরও সহজ করার বিভিন্ন উপায়। বিভিন্ন কলকারখানায় উৎপাদিত কার্বনকে হ্রাস করে গ্রীন হাউজ প্রভাব কমানোর বিষয়টি অনেক শিক্ষার্থী তাদের প্রজেক্টে তোলে ধরে। বহুতল ভবনের সিঁড়ি গুলোতে এক ধরনের চাপজনিত যন্ত্র দিয়ে যান্ত্রিক শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করার বিশেষ এক পন্থা নিয়ে হাজির হয়ে গ্রুপ-২-এর কিছু শিক্ষার্থী। তাদের ভাষ্যমতে, এই প্রক্রিয়া দ্বারা সহজেই দেশের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য ব্যক্তিগত যানবাহনের পরিমান কমিয়ে গণপরিবহন বাড়ানোর মতো নতুন নতুন চিন্তা ভাবনার বাস্তব ভিত্তি উঠে আসে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে। কিছু শিক্ষার্থী সোলার রোড নাম দিয়ে দেশের সকল রাস্তায় সৌর প্যানেল স্থাপন করতে চায়। সেখানে ঘর্ষণ শক্তি থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
বর্তমান চিন্তাধারায় সৌর রাস্তার বিষয়টি অসম্ভব হলেও হয়তো এদের মাধ্যমেই একদিন তা সম্ভবপর হয়ে উঠবে। গ্রুপ-৩-এর শিক্ষার্থীদের কর্মপরিকল্পনা ছিল আরও উন্নত ধরনের। নানা ধরনের সমস্যার সহজ সমাধান তৈরি করাই ছিল এই গ্রুপের শিক্ষার্থীদের অন্যতম লক্ষ্য।
দেশের বর্তমান বন্যা সংকটের সহজ সমাধান নিয়ে মেলার শ্রেষ্ঠ প্রজেক্ট নির্বাচিত হয় অষ্টম শ্রেণীর রোদিয়া শারমীন, হাসান জারিফ, অর্ণব জামান, সাইফান রেজওয়ান, সাদিক হাসানের তৈরি করা ‘সামওয়ান ওয়েস্ট, সামওয়ান ওয়েল্থ’ নামক প্রস্তাবনা। তারা দেখাতে সক্ষম হয় কিভাবে আধুনিকমত উপায়ে বন্যায় জান মালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে নিয়ে আসা সম্ভবপর হয়। পুরাতন প্লাস্টিককে বিশেষ উপায়ে ব্যবহার করে তারা ভাসমান বাড়ি তৈরি করা দেখায়।