ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

শুভ্র কাশফুলের স্নিগ্ধতায় সেজেছে ক্যাম্পাস

বিএম মিকাইল হোসাইন

প্রকাশিত: ২১:৪২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শুভ্র কাশফুলের স্নিগ্ধতায় সেজেছে ক্যাম্পাস

কাশফুলের স্নিগ্ধতায় সেজেছে ক্যাম্পাস

‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি,
ছাড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি।’

-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। ভাদ্র-আশ্বিন এই দুই মাস নিয়ে হয় শরৎকাল। শরৎকালকে গুণবাচক নামে ঋতুর রানীও বলা হয়। শরৎকালের প্রকৃতি হয় কোমল, শান্ত-স্নিগ্ধ, উদার। ক্ষণিকের জন্য মাঝে মধ্যে বৃষ্টিপাত হয়। নদী, বিল, পুকুর ও হাওড়ের স্বচ্ছ পানির বুকে শুভ্র শাপলার পাগল করা হাসি প্রেয়সীর হৃদয়কাড়া হাসির মতোই মনে হয়। তাইতো শরতের বন্দনায় নির্মলেন্দু গুণ তার একটি কবিতায় লিখেছেনÑ
‘ওগো কাশের মেয়েÑ
আজকে আমার মন জুড়ালো তোমার দেখা পেয়ে,
তোমার হাতে বন্দী আমার ভালবাসার কাশ
তাইতো আমি এই শরতে তোমার কৃতদাস।’
বাঁধাধরা সময় দুই মাস হলেও আমার মনে হয় সবচেয়ে কম সময় স্থায়িত্ব পায় এই শরৎকাল। সবচেয়ে কম সময় স্থায়িত্ব পেলেও শরৎ যেন প্রকৃতির শুভ্রতায় আনন্দ দেওয়ার মাত্রাটা অন্যসব ঋতু থেকে এগিয়ে। নদীর কিনারে বালির চরে হেসে ওঠে কাশবন। এ সময় মানুষের মাঝে এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। প্রকৃতির আবহাওয়া থাকে নাতিশীতোষ্ণ, না গরম না শীত। কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আবার কখনো আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় ভাসিয়ে এক চিলতে সোনালি রোদ। এই কারণেই ভ্রমণ পিপাসুরা ভ্রমণ করে খুব বেশি মজা পায় এই শরতেই। 
ঠিক তার ব্যতিক্রম নয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। শরৎ এলে কাশফুলের শুভ্রতা আর প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় পাবিপ্রবি হয়ে ওঠে এক রোমন্থন স্থান। এ বছরেও শরতের আগমনী বার্তায় কাশফুলের শুভ্রতায় ছেয়ে গেছে প্রিয় পাবিপ্রবি ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ভবনের সামনে থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্দিরের পাশে, নবনির্মিত  হলের সামনে ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শুভ্র কাশফুলের স্নিগ্ধতা লক্ষ্য করা যায়। প্রকৃতির এই মেলবন্ধন দেখতে প্রায় প্রতিদিন ভিড় করেন দূরদূরান্ত থেকে আসা অসংখ্য দর্শনার্থীরা।
প্রতিদিন বিকেল হলেই ক্যাম্পাসে আনাগোনা বাড়তে থাকে দর্শনার্থীদের, পশ্চিম আকাশে সূর্য মামা যতক্ষণ না হেলে পড়ে যায়, প্রকৃতিপ্রেমীরাও ঠিক ততক্ষণ সুভ্র কাশফুলের মায়ায় আচ্ছাদিত থাকে। মৃদু বৃষ্টি আর আকাশের শুভ্রতায় ক্যাম্পাসের প্রকৃতি যেন মেলে ধরে তার আপন মহিমা, বিস্তার করতে চাই তার সুশোভিত রূপ।

বাহারি এই রূপের সুধা নিতে কেউ বন্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে ঘুরতে আসেন, কেউবা আবার তার প্রিয়তমাকে নিয়ে। প্রিয়তমার নীল শাড়ি আর কাশফুলের সুভ্রতাকে কেউবা আবার ক্যামেরাবন্দি করায় ব্যাস্ত সময় পার করেন। কেউ কেউ সুন্দর এই মুহূর্তগুলোকে আজীবন স্মরণীয় রাখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্মৃতি হিসেবে বাক্সবন্দি করেন।
এভাবেই শরৎ তার রূপ বৈচিত্র্য দিয়ে পাবিপ্রবিকে আলিঙ্গন করেছে, যার মুগ্ধতায় আনন্দিত নানা শ্রেণির মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। কাশফুল মূলত ছনগোত্রীয় এক ধরনের বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। কাশফুল উদ্ভিদটি উচ্চতায় সাধারণত ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।

×