ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

ইবিতে ৯ মাস আগে ‘কান ফাটানো’ র প্রতিশোধ নিল ছাত্রদল কর্মী

ইবি সংবাদদাতা 

প্রকাশিত: ০৯:০৮, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১২:৫৮, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইবিতে ৯ মাস আগে ‘কান ফাটানো’ র প্রতিশোধ নিল ছাত্রদল কর্মী

অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী

ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক সাবেক শিক্ষার্থীকে মারধর ও ক্যাম্পাস ত্যাগের হুমকির অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদল কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত এনামুল হক ইমন আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) রাত পৌঁনে আটটার দিকে লালন শাহ হলে এ ঘটনা ঘটে। 

প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত ছয় মাস আগে ভুক্তভোগী লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজুল হক রুমন হল ছেড়ে দেয়। খুলনায় এক কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে তিনি দুইদিন আগে থেকে ক্যাম্পাসের হলে অবস্থান করছিলেন। শনিবার সন্ধ্যার পর দশ-বারোজন শিক্ষার্থী হঠাৎ তার রুমে প্রবেশ করে। পরে তাঁর রুমমেটদের আটকে রেখে রুমনকে মারধর করে অভিযুক্তরা। এছাড়া আগামীকালের মধ্যে হল ছাড়ার হুমকি দেয় তারা।

এদিকে মারধর করতে আসা অভিযুক্তের সহপাঠী আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শ্রাবণ বলেন, গত কয়েকমাস আগে আমার বন্ধুর সাথে একটা ঘটনা ঘটেছিলো। সেমসয় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় বেঁচে যায় রুমন। আজ আমরা গিয়েছিলাম তার সাথে দেখা করতে তারপর একপর্যায়ে মারধরের ঘটনা ঘটে। এসময় তাদের ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ততার কথা জানতে চাইলে বলেন, হ্যাঁ, আমরা ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত। 

এবিষয়ে অভিযুক্ত এনামুল হক ইমন বলেন, গত দশ এগারো মাস আগে আমাকে মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয় রুমন ভাই৷ তবে সেসময় সে ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় থাকায় আমি বিচার পাই নাই। ছাত্রলীগের সভাপতির রুমে আমাকে আর আমার বাবাকে ডেকে হ্যান্ডশেক করিয়ে মিটিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আমি খুবই মর্মাহত হয়েছিলাম৷ এজন্য আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে ভাইয়ের রুমে আজ কথা বলতে গিয়েছিলাম। তারপর আমাদেরকে খারাপ ব্যবহার করলে তাকে মারধর করি। আমি তখন বিচার না পেয়েই এই প্রতিশোধ নিয়েছি।

এদিকে ভুক্তভোগী মিনহাজুল হক রুমন বলেন,  আমি খুলনা যাওয়ার পথে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসি। আজ রাতে আমি আমার কক্ষে ছিলাম। এমন সময় দশ-বারোজন মিলে আমার রুমে এসে আমাকে মারধর করে এবং আগামীকালের মধ্যে হল ছাড়ার আল্টিমেটাম দেয়।

এসময় তিনি আরও বলেন, ইমনের সাথে পূর্বের একটি ঝামেলা হয়েছিল। তবে সেটা ছাত্রলীগের সভাপতি তার বাবার উপস্থিতিতে মিটিয়ে দিছিলেন। হয়তো সেই ঘটনার জের ধরে আজ ওরা এসেছিলো।


এদিকে অভিযুক্তরা কেউই শাখা ছাত্রদলের কমিটিতে নেই এমন মন্তব্য করেছেন শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন। তিনি বলেন, আমাদের নিকট অভিযোগ আছে তারা এর আগে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলো। তারা আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটাচ্ছে। শ্রাবণসহ আরও কয়েকজন আমাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে তারা আসে। কিন্তু আমরা এমন কাউকে আমাদের দলে যুক্ত করতে চাই না, যারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করে। ছাত্র দল কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপরাজনীতি প্রশ্রয় দেয় না।

এর আগে গত ১৮ নভেম্বর রাতে ‘দ্রুত গতিতে বাইক চালানোর’ কারণে এনামুল হক ইমনকে থাপ্পড় দিয়ে কানের পর্দা ফাটানোর অভিযোগ উঠে মিনহাজুল হক রুমনের বিরুদ্ধে। পরে ২৭ নভেম্বর তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন আজাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ইমন। পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত উভয়পক্ষকে নিয়ে বিষয়টিকে মীমাংসা করে দেন। 

তাসমিম

×