ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে শিশু হত্যা

ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জাবিতে মশাল মিছিল

জাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২২:১৬, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জাবিতে মশাল মিছিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল।

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি শিশু হত্যা ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মশাল মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘আধিপত্যবাদ বিরোধী মঞ্চ’ ব্যানারে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি শহীদ মিনার এলাকা থেকে শুরু হয়। পরে ট্রান্সপোর্ট চত্বর, শহীদ সালাম-বরকত হল হয়ে বটতলায় এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

মিছিলে শিক্ষার্থীদের ‘ভারতীয় প্রকল্প, জাহাঙ্গীরনগরে চলবে না’, ‘মোদির দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘সীমান্তে যদি মানুষ মরে, সেভেন সিস্টার্স থাকবে না রে’, ‘সীমান্তে যদি মানুষ মরে চিকেন নেক থাকবে না রে’, ‘মোদীর গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘ভারতীয় প্রকল্প, চলবে না চলবে না’, ‘সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, চলবে না-চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ৪৯ ব্যাচের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম নাইমের সঞ্চালনায় বক্তারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের সমালোচনা করেন। এসময় ৪৮ ব্যাচের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসান বলেন, ‘যদি ন্যূনতম কোন বন্ধুত্বের আকাঙ্ক্ষা থাকে থাকে তাহলে সীমান্তে হত্যা বন্ধ করতে হবে। যে সমস্ত বিএসএফ এই সীমান্তে হত্যার সাথে জড়িত, তাদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সীমান্তে হত্যার বিষয়ে বাংলাদেশকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।’

৪৯ ব্যাচের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আহসান লাবীব বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোড়া ইসরায়েল। তারা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি নষ্ট করেছে। তেমনি উপমহাদেশের বিষফোড়া ভারত। আমাদের দেশে ১৫ বছর যে আওয়ামী রেজিম ছিল, তারা কখনো সীমান্ত হত্যার বিচার চায়নি। ভারতীয় তাঁবেদার এই হাসিনা সরকার সীমান্ত হত্যার নিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের আবেদন আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে এই সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। ’

আধিপত্যবাদ বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক আনজুম শাহরিয়ার বলেন, ‘কিছুদিন আগেই আমাদের দেশের ২০টি জেলাকে বন্যার মাধ্যমে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। এর কিছুদিন পরেই সীমান্তে স্বর্ণা দাসকে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী রেজিমে সীমান্তে হওয়া হত্যাগুলোর বিচার পাইনি৷ আমরা হুঁশিয়ার করে বলছি, ভারতীয় আগ্রাসন আমাদের দেশে চলতে থাকলে আমরা আর বসে থাকবো না। ২০০৯ থেকে প্রায় ৬০০ এর অধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এগুলো সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রকল্পকে আমরা আধিপত্যবাদেরই অংশ হিসেবেই মনে করছি। ভারতের অধীনে কোন প্রকল্প এই জাহাঙ্গীরনগরে চলতে দেয়া হবে না। যদি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কোন দ্বিপাক্ষিক কোন চুক্তি করতে হয় তবে সেটা হতে হবে সমানে সমান। সেখানে যদি কোন আধিপত্য দিল্লি বিরাজ করতে যায় তাহলে সেটা মেনে নেয়া হবে না।’

উল্লেখ্য, গত রবিবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে স্কুল শিক্ষার্থী স্বর্ণা দাস নিহত হয়। তার মরদেহ ৪৫ ঘণ্টা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। নিহত স্বর্ণা দাস (১৬) মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের পরেন্দ্র দাসের মেয়ে। সে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

×