ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১

কোটা পুনর্বহালের রায় বহাল

ফের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ, আন্দোলন চালাতে কমিটি 

জাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ৪ জুলাই ২০২৪

ফের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ, আন্দোলন চালাতে কমিটি 

সড়কে শিক্ষার্থীরা। ছবি: জনকণ্ঠ

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার প্রতিবাদে ও আপিল বিভাগ শুনানির দিন পেছানোয় পুনরায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আবেদনটি উপস্থাপন করেন। 

তবে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ ‘নট টুডে’ বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত আপিলের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। এছাড়া রাজপথে আন্দোলন করে সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিবর্তন করা যায় কি না- সেটিও জানতে চান প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।শুনানির দিন পেছানোর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি শহীদ মিনার হয়ে প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আমরা বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করেছি। অনতি বিলম্বে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

আন্দোলন চালিয়ে নিতে কমিটি গঠন 
হাইকোর্টে শুনানি না হওয়ায় কোটাবিরোধী আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কায় আন্দোলন চালিয়ে নিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ৪৭ ব্যাচের আল বেরুণী হলের আবাসিক ছাত্র আরিফ সোহেলকে আহ্বায়ক ও মওলানা ভাসানী হলের মাহফুজ ইসলাম মেঘ।

বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সংশপ্তক’ ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন- ৪৭ ব্যাচের আল বেরুণী হলের আবাসিক ছাত্র আব্দুর রশিদ জিতু, ৪৭ ব্যাচের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের জাহিদুল ইসলাম ইমন, ৪৯ ব্যাচের আল বেরুণী হলের তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম। এছাড়া সদস্য হিসেবে রয়েছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা ও জেবা হামিরা, বেগম খালেদা জিয়া হলের নাদিয়া রহমান, আল বেরুণী হলের সোহেল, মীর মশাররফ হোসেন হলের নাসিম আল তারিক ও নিয়াজ মোর্শেদ মাহি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাগর, শেখ রাসেল হলের অন্তর, মওলানা ভাসানী হলের স্বপন এবং শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের আরিফ হোসাইন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আহ্বায়ক আরিফ সোহেল বলেন, প্রধান বিচারপতির মন্তব্যে প্রতি সম্মান জানিয়ে বলছি, আইন গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা থেকে উদ্ভূত। গণমানুষের আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই আইনের কাঠামোগুলোর পরিবর্তন হয়। 

আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবিটি যে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের দাবি তা আমরা হয়ত কাজের মাধ্যমে বিচারপতিকে উপলব্ধি করাতে পারিনি। আমরা আমাদের সংগ্রামের ভিতর দিয়ে প্রধান বিচারপতি ও সরকারকে বুঝিয়ে দিতে চাই, সারাদেশের কোটার যে ব্যবস্থা, এর একটি যৌক্তিক সংস্কার প্রয়োজন।

একই বিষয়ে যুগ্ম-আহ্বায়ক তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি মুক্তিযোদ্ধাদের মিসক্রিয়েন্ট বা দুষ্কৃতকারী বলেছিল। আমরা যদি তখন বিচারপতির কথা শুনে মনে করতাম আইন অমান্য করছি তাহলে এই স্বাধীন দেশ পেতাম না। আমরা এই জায়গা থেকে মনে করি, দেশের মানুষ ও ছাত্র সমাজ যা চায়, একটি মেধাভিত্তিক প্রশাসন গড়তে আইনকে আইনের কাজ করা উচিত। মহামান্য হাইকোর্ট আমাদের বিষয়টি বুঝবেন। জনবিচ্ছিন্ন যে রায় দিয়েছে- তা বাতিল করবে।

 

এসআর

×