ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১

জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশ: ইবির সেই নিরাপত্তা কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত

ইবি সংবাদদাতা 

প্রকাশিত: ১২:৩৫, ২৭ জুন ২০২৪

জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশ: ইবির সেই নিরাপত্তা কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত

অভিযোগের প্রাথমিকভাবে প্রমাণও পেয়েছে প্রশাসন।

ঈদের ছুটির মধ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থেকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মচারী ফরিদ উদ্দীনের প্রটোকলে গাছের গুড়ি ও খড়ি পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের প্রাথমিকভাবে প্রমাণও পেয়েছে প্রশাসন। এর প্রেক্ষিতে ওই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে সূত্রে জানা গেছে, ফরিদ উদ্দীন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের কম্পিউটার অপারেটর। ঈদের ছুটিতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ইবি ক্যাম্পাস থেকে গাছের গুড়ি ও খড়ি নিয়ে যান তিনি। এই অপরাধে কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা-বিধির ১২ এর ১ ধারা অনুযায়ী ২৬ জুন অপরাহ্ন থেকে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। তবে বরখাস্ত থাকাকালীন বিধি অনুযায়ী জীবন-ধারণ ভাতা পাবেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিষয়টি নিয়ে জনকণ্ঠ অনলাইনে ‘নিরাপত্তা কর্মচারীর প্রটোকলে ইবির গাছ পাচার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি কর্তৃপক্ষ আমলে নেয়। পরে বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ছাত্র-উপদেষ্টা ও প্রক্টরিয়াল বডি যৌথ জরুরি সভা করে। সেই সভায় এস্টেট প্রধানকে সরেজমিন পরিদর্শন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে পরিদর্শন করে এস্টেট অফিস প্রতিবেদন দেয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদের কাছে। সেই প্রতিবেদনসহ প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি পাঠান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আনসাররা জানিয়েছে, গত ১৪ জুন আনুমানিক ভোর পাঁচটার দিকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক দিয়ে ৭-৮টি ভ্যানযোগে গাছের গুড়ি ও খড়ি পাচার হয়। এসময় আনসার সদস্যরা ভ্যান বের হতে বাঁধা দেয়। পরে ওই নিরাপত্তাকর্মচারী নিজে গিয়ে ‘ভ্যান পাসের’ ব্যাবস্থা করেন। এসময় অভিযুক্ত সেই কর্মচারী বাইকযোগে ওই স্থানে টহলের মাধ্যমে প্রটোকল দিচ্ছিলেন এমন একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তিনি বাইক নিয়ে ফটকের বাইরে ভেতরে যাওয়া আসা করছিলেন। এসময় একে একে কয়েকটি ভ্যান বের হতে দেখা যায়। সেগুলোতে কয়েকটি বড় গাছের গুড়ি আর কয়েকটিতে ছোট-বড় খড়ি ছিল। এদিকে ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকের পানি জমিতে সেচের অভিযোগও আছে।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন নিরাপত্তা কর্মচারী ফরিদ উদ্দীন। তিনি বলেন, আমি একটি ভ্যানে কিছু খড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম। সিকিউরিটি প্রধান (আব্দুস সালাম সেলিম) স্যারের সঙ্গে কথা বলেই নিয়েছিলাম। পরে বিশ^বিদ্যালয়ের এক সিনিয়র কর্মচারী বাঁধা দিলে সেগুলো আমি আনসার ক্যাম্পের সামনে রেখে আসি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মালি আলতাফ হোসেন বলেন, ঈদের ছুটির আগে বিভিন্ন জায়গায় ১০০-১৫০ মণের মত খড়ি কেটে রেখে ক্যাম্পাস থেকে গিয়েছিলাম। ক্যাম্পাসে ফিরে দেখি একটা খড়িও নেই।

প্রধান নিরাপত্তা কর্মাকর্তা আব্দুস সালাম সেলিম বলেন, ফরিদ আমাকে বলেছিল কিছু ছোট-খাটো খড়ি আর পাতা নিয়ে যাবে। তাই আমি বাঁধা দেইনি। যখন শুনলাম ৩ ভ্যান খড়ি নিয়ে গিয়েছে আমি তাকে সব ফেরত দিয়ে যেতে বলেছি। আর এটা অবশ্যই চুরি এবং বড় অপরাধ। সিকিউরিটির দায়িত্বে থেকে এমন কাজ করা মোটেও সমীচিন নয়। প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ভিসি স্যার বাকি ব্যবস্থা নেবে।

এস্টেট প্রধান শামছুল ইসলাম জোহা বলেন, আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রক্টরের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছি। বাকি ব্যবস্থা প্রশাসন নেবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক প্রতিবেদন দাখিত করতে এস্টেট প্রধান বরাবর নোট দিয়েছিলাম। তারা প্রতিবেদন দেওয়ার পর নোট আকারে রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠিয়েছি। বাকি ব্যবস্থা প্রশাসন নেবে।

এম হাসান

×