চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার
বিভিন্ন সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর দুই তিন মিনিট আগে খোদ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের মোবাইল থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে চলে যেতো প্রশ্নপত্র। পরে পরীক্ষার্থীর কাছে থাকা অত্যাধুনিক ডিভাইসে একের পর এক উত্তর বলে দিতো একটি চক্র। বিনিময়ে নিতো লাখ লাখ টাকা।
এ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর ডিবি পুলিশ বলছে, যারা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করেছেন তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন : সুদের চক্রে ফেঁসে বিষপানে জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকার আত্মহত্যা
নিশ্চিত জীবনের আশায় অধিকাংশ তরুণের লক্ষ্য একটি সরকারি চাকরি নেয়া। সোনার হরিণসম সেই চাকরি বাগাতে নানান ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয় প্রার্থীরা। সেসব প্রার্থীকে সহায়তা করতে গড়ে উঠেছে একটি চক্র। যারা লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষার সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকা প্রার্থীদের প্রশ্নের উত্তর বলে দেয়।
এজন্য ছোট একটি ডিভাইস চাকরি প্রার্থীর কানের মধ্যে এমনভাবে ঢুকিয়ে দেয়া হয়, যা বাইরে থেকে বোঝার কোনো সুযোগ থাকে না।
সরকারি পরীক্ষার প্রশ্ন জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, পরীক্ষা শুরুর দুই-তিন মিনিট আগে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রশ্নপত্রের ছবি পাঠাতেন চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে। বাইরে থেকে একের পর এক উত্তর বলে যেতো তারা।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, অনেক লোক থাকে প্রশ্নের সমাধান করার। পাঁচ মিনিটের মধ্যে সব সমাধান করে ফেলে চক্রে সদস্যরা। আলাদা আলাদা বিষয়, আলাদা আলাদা লোক সমাধান করে। পরে তাদের কানে থাকা ডিভাইস থেকে তারা শুনে শুনে উত্তর লিখতেন। শেষে বাইরে এসে বের করা হতো কানের বিশেষ ওই যন্ত্র।
এ কাজে চাকরি প্রত্যাশী প্রত্যেকের কাছে থেকে নেয়া হতো পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা। যেসব পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের মোবাইল থেকে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে তদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। এমনকি তদন্ত চলছে এ পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিয়ে চাকরিরত রয়েছে এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়েও।
হারুন অর রশিদ জানান, যারা টাকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চেষ্টা বা টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করেন, আমরা তাদেরও শাস্তির আওতায় আনবো।
সংবাদ সম্মেলনে অসাধু উপায় অবলম্বন করে চাকরি না খুঁজতে অভিভাবকসহ চাকরি প্রত্যাশীদের সতর্ক করেন ডিবি প্রধান।
এবি