ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর ছবি মুছে ব্যঙ্গচিত্র, জাবি ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতা বহিষ্কার

জাবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর ছবি মুছে ব্যঙ্গচিত্র, জাবি ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতা বহিষ্কার

বহিস্কৃত দুই নেতা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি মুছে ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনের ঘটনায় ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের দুই নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

বহিষ্কৃত নেতারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ ব্যাচের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অমর্ত্য রায় ও ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি। অমর্ত্য ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি ও ঋদ্ধ সাধারণ সম্পাদক।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে রাত সাড়ে নয়টায় রেজিস্ট্রার ও সিন্ডিকেট সচিব আবু হাসান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এ সময় তিনি বলেন, সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালে পূর্বে থেকে আঁকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি মুছে ফেলার ঘটনায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অমর্ত্য রায় ও ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলিকে এক বছর করে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে পূর্বে আঁকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে একটি ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কন করে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের নেতাকর্মীরা। তবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে এই চিত্র অঙ্কন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের এই নেতারা। ব্যঙ্গচিত্রে একটি নারীর অবয়ব, ছয়টি মাথার খুলিসহ একটি পতাকা আঁকা হয়। এর পাশেই লিখা হয় ‘ধর্ষণ ও স্বৈরাচার থেকে আজাদী’। এছাড়া ব্যঙ্গচিত্রের নিচে ছাত্র ইউনিয়নের নাম লিখা হয়।

এই ব্যঙ্গচিত্রে থাকা নারীর অবয়বের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পূর্বের প্রতিকৃতি মুছে ফেলার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে অনশনে বসেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম। ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনের পেছনে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে তিনি প্রায় ৮৩ ঘন্টা এক টানা অনশন করেন। এক পর্যায়ে উপাচার্য এসে এ ঘটনার যথাযথ তদন্ত শেষে সিন্ডিকেট সভায় শাস্তি প্রদানের আশ্বাস দিলে অনশন ভাঙেন ছাত্রলীগের এই নেতা। 

এছাড়া এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দুই সংগঠন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

শাস্তি ঘোষণার পর সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক এনাম বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি প্রদান করায় ধন্যবাদ জানাই। এই রায়ের মাধ্যমে ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী খুশি। এটা হওয়া উচিত ছিলো। 

জাতির পিতাকে অবমাননা করলে পৃথিবীর যেই প্রান্তেই হোক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার প্রতিবাদ করবে। আজকে আমরা সত্যিই আনন্দিত।

এসআর

×