গ্রেপ্তার আসামিরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক দম্পতিকে ডেকে এনে আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে হলের পাশে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় চার ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে সাভারের আশুলিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফি।
এ ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ৯(৩) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে শনিবার গভীর রাতে সাভার মডেল থানার পুলিশ ও আশুলিয়া থানার পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে মীর মশাররফ হোসেন হল থেকে তিন আসামিকে আটক করে। রবিবার সকালে সাভার থানা এলাকা থেকে আরেক অভিযুক্তকে আটক করা হয়। পরে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এছাড়া দুই জন অভিযুক্ত এখনও পলাতক রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে আসামিদের ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়েছে। এবং সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে বলে জানানো হয়।গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান সাগর, ৪৬ ব্যাচের সাগর সিদ্দিক ও ৪৫ ব্যাচের হাসানুজ্জামান। গ্রেপ্তার আসামিরা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র। তারা শাখা ছাত্রলীগের মীর মশাররফ হোসেন হলের হল কমিটির পদ প্রত্যাশী ও সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী। এছাড়া ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত মামুনুর রশিদ এবং স্বামীকে আটকে রাখায় সহায়তা ও মারধর করা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মুরাদ পলাতক রয়েছেন। এই ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ মোস্তাফিজুর রহমানকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, ‘ভুক্তভোগীর স্বামী রাতেই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় মোস্তাফিজ ও মামুনুর রশীদকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া বাকি চারজনের বিরুদ্ধে মারধর ও আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।’
এ ঘটনায় সাভার মডেল থানা ও আশুলিয়া থানার পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান আবদুল্লাহিল কাফী। তিনি বলেন, ‘রবিবার সকালে মামলা হলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পলাতক আসামি মুরাদ ও মামুনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের ৩১৭ নং কক্ষে (মুরাদের কক্ষ) স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে কৌশলে নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ও মামুনুর রশীদ মামুন।
এছাড়া ধর্ষণের পর সাব্বির হাসান সাগর, সাগর সিদ্দিক ও হাসানুজ্জামান মূল অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমানকে পালাতে সহায়তা করেন বলে সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।
এসআর