মেডিকেল শিক্ষার্থী
দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিচালনায় নতুন শর্ত জুড়ে দিতে যাচ্ছে সরকার। শর্ত পূরণ না করলে মেডিকেল কলেজের নবায়নে সুপারিশ করা হবে না।
জানা গেছে, বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো পরিচালনা জন্য নির্দিষ্ট সময় পর পর বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন নিতে হয়। এজন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করতে হয়। আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে নবায়নের সুপারিশ করে অধিদপ্তর। তাদের সুপারিশের আলোকেন নবায়নের অনুমোদন দেয় বিএমডিসি।
নতুন শর্ত অনুযায়ী, নবায়ন পেতে ৫০টি সূচক বিবেচনায় নেওয়া হবে। এ সূচকে নবায়ন পেতে অন্তত ৭৫ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।
সূত্র জানায়, বেসরকারি মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজ পরিচালনা আইন পাস হয়েছে। এই আইনের আওতায় নতুন বিধিমালা তৈরি করছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। বিধিমালা অনুযায়ী, বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকে ৫০টি সূচকে মূল্যায়ন করা হবে। সবগুলো সূচক যথাযথভাবে পূরণ হলে ১০০ নম্বর দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ নম্বর পেলে শর্ত দিয়ে নবায়নের সুপারিশ করা হবে।
৫০ থেকে ৭০ শতাংশ নম্বর পাওয়া মেডিকেল কলেজগুলোতে শর্ত পূরণ করে পুনরায় আবেদন করতে হবে। নম্বর ৫০ শতাংশের নিচে হলে মেডিকেল কলেজগুলোকে নবায়নের সুপারিশ করা হবে না। ২৫ শতাংশের কম নম্বর পেলে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধসহ মেডিকেল কলেজ বন্ধের সুপারিশ করবে অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা বলেন, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য আইন লাগে। সম্প্রতি আইন তৈরি হয়েছে। তবে এতে সব বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ থাকে না। এজন্য আমরা একটি বিধিমালা এবং প্রো-বিধিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এটি তৈরি হলে দেশের মেডিকেল শিক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। তখন কেউ চাইলেই আইন পাশ কাটিয়ে মেডিকেল কলেজের নবায়ন নিতে পারবেন না।
বিধিমালায় আরও যা যা থাকছে
মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিজস্ব জমি ও ফ্লোরস্পেস থাকতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) অধিভুক্তি হালনাগাদ, হাসপাতালে ৫০ জন রোগীর জন্য ২৫০টি বিছানা থাকতে হবে। পরবর্তীতে প্রতি একজন শিক্ষার্থী বৃদ্ধির জন্য ১০টি করে শয্যা বাড়াতে হবে।
শ্রেণিকক্ষ, মিউজিয়াম, ল্যাবের পরিসর ও সরঞ্জাম বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়া সার্ভিস রুল, অর্গানোগ্রাম, তিন মাস অন্তর গভর্নিং বডির সভা, কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স স্কিম কার্যক্রম নিয়মিত হতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:১০ হতে হবে।
এর মধ্যে ৪০ শতাংশ শিক্ষক পোস্ট গ্রাজুয়েশন (ফ্যাকাল্টি পর্যায়ের) সম্পন্নকারী হতে হবে। এটি কোনো ভাবেই ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। মেডিকেল কলেজগুলোতে পৃথকভাবে শিক্ষার্থীদের হোস্টেল নির্মাণ করতে হবে।
হাসপাতালের ক্ষেত্রে এমবিবিএসের যে সকল বিষয়ে বোর্ড হয় (মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, প্যাথলজি, ফার্মাকোলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফরেনসিক মেডিসিন, কমিউনিটি মেডিসিন, বায়োকেমিস্ট্রি, এনাটমি, ফিজিওলজি, পেডিয়াট্রিকস, অর্থোপেডিকস) সে সকল বিষয়ের ক্ষেত্রে নূন্যতম একজন করে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক থাকতে হবে। যে সকল বিষয়ে বোর্ড হয় না সে সকল বিষয়ের ক্ষেত্রে অন্তত পাঁচজন করে শিক্ষক থাকতে হবে।
এসআর