বিএম কলেজ
প্রতি সেশনে চিকিৎসা খরচ বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হলেও বন্ধ রয়েছে বরিশাল সরকারি ব্রজ মোহন (বিএম) কলেজের চিকিৎসা কেন্দ্র। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ শিক্ষার্থীরা বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বিদ্যাপিঠ বিএম কলেজে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বা পটুয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়েও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চিকিৎসা খাতে অর্থ নেয় কলেজ প্রশাসন।
কিন্তু চিকিৎসা খাতে কোনো সেবাই পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। এমনকি দুই বছর যাবত চিকিৎসা কেন্দ্রটি বন্ধ থাকলেও চিকিৎসা খাতে কোনো সেশনে অর্থ আদায় বন্ধ হয়নি। তারা আরও বলেন, কোনো শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সদর হাসপাতাল কিংবা শেবাচিমে নিয়ে যেতে হয়। কলেজের চিকিৎসা কেন্দ্রটি চালু থাকলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পরতে হতো না।
বিএম কলেজের ছাত্র ইমরান হোসেন বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা চিকিৎসা কেন্দ্রে ডাঃ দেলোয়ার হোসেন নামের একজন চিকিৎসক ছিলেন। তিনি কখনো কলেজে আসতেন না। কলেজ ক্যাম্পাসের বাহিরে তার কাছে চিকিৎসা সেবা নিতে গেলে তাকে ৫০ টাকা ভিজিট দিতে হতো। পরে ডাঃ মনীষা চক্রবর্তীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। সে (ডাঃ মনীষা) কলেজে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতেন।
ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী জানান, ২০১৫ সালে খন্ডকালীণ চিকিৎসক হিসেবে তাকে নিযুক্ত করে কলেজ প্রশাসন। সপ্তাহে তিনদিন কলেজে যাওয়ার কথা থাকলেও পাঁচদিন যেতেন। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে চিকিৎসা কেন্দ্রটি বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা তাকে জানানো হয়। পরবর্তীতে কলেজ প্রশাসন তাকে তলব না করায় তিনি আর চিকিৎসা কেন্দ্রে যাননি। তবে কলেজের চিকিৎসা কেন্দ্রে এখনো তার নাম সংবলিত সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
কলেজের প্রশাসনিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, প্রতি সেশনে চিকিৎসা খাতে একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২৫ টাকা আদায় করা হয়। যা বাৎসরিক হিসেবে সাত লাখ টাকার বেশি। এ অর্থ ব্যয় করে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসক ও ওষুধ সরবরাহের কথা রয়েছে। কিন্তু মহামারী করোনার সময় লকডাউনের কথা বলে মৌখিক নির্দেশনায় চিকিৎসকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়।
এ ব্যাপারে বিএম কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আলামিন সরোয়ার জানান, করোনাকালে কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা কলেজে আসে নাই। তাই চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছিলো। তবে সর্বশেষ একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নতুন চিকিৎসক নিযুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোলাম কিবরিয়া জানান, মহামারী করোনার পরে নতুন কোনো চিকিৎসক নেওয়া হয়নি। তাই চিকিৎসা কেন্দ্রটি বন্ধ ছিলো। এখন নতুন করে চিকিৎসক নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালু করা হবে।
এমএস