মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কুরআনের ভাষা হওয়ায় আরবি মুসলমানদের অন্তরে সম্মান ও গাম্ভীর্যের অধিকারী। বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত ভাষাগুলোর মধ্যে আরবি সমৃদ্ধ ভাষা। যে ব্যক্তি জ্ঞান-বিজ্ঞানের মহাসাগরে ডুব দিয়ে মণিমুক্তা সংগ্রহ করতে চায় তাকে আরবি ভাষায় পারদর্শী হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই ভাষা সম্পর্কে আল্লাহতা’আলা বলেন, ‘আমি আরবি ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা উপলব্ধি করতে পারো (সূরা : ইউসুফ, আয়াত : ২)। এ ভাষার ধর্মীয় গুরুত্ব যেমন রয়েছে তেমনি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক প্রত্যেকটা দিক থেকে এই ভাষা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবহারের দিক থেকে বর্তমান বিশ্বের চতুর্থতম ভাষা আরবি। এজন্যই প্রায় চার দশক পূর্বে ১৯৭৩ সালের আজকের এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ সভার ২৮তম অধিবেশনে আরবি ভাষাকে এর দাপ্তরিক ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ২০১২ সালে ইউনেস্কো এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৮ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক আরবি ভাষা দিবস ঘোষণা করে। এরপর থেকে দিনটি ‘আন্তর্জাতিক আরবি ভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। প্রতিবছর নানা বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এই দিনটি উদ্যাপন করে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও আনুষ্ঠানিকভাবে দিনটি উদ্যাপন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল- ‘আল লুগাতুল আরাবিয়্যাহ্ ওয়ায যাকায়ুল ইসতেনায়ি: তাযিযুল ইবতিকার মায়াল হাফেজ আলাত তারাসিস সাকাফি’ অর্থাৎ ‘আরবি ভাষা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি উদ্ভাবন বাড়াতে হবে’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এই দিন সকাল ৯.৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় শহিদুল্লাহ কলা ভবনের পূর্বগেট থেকে বর্ণাঢ্য এক র্যালির আয়োজন করা হয়। পরবর্তীতে সকাল ১০.১০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যদ্বয়ের উপস্থিতিতে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করা হয়। এরপর র্যালিটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে সিনেট ভবনে প্রবেশ করে। সেখানে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল পর্ব। যেটার সূচনা হয় আরবি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বাহাউদ্দিনের কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে। তেলাওয়াত পরবর্তীতে শুরু হয় বক্তব্যের পর্ব। যেখানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. মো. নিজাম উদ্দিন (সিন্ডিকেট মেম্বার ও সাবেক চেয়ারম্যান, আরবি বিভাগ)। তিনি আরবি ভাষায় এই ভাষাকে কেন জাতিসংঘের ভাষা করা হয়েছে? কখন করা হয়েছে? এবং সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিকসহ আরও বিভিন্ন দিক থেকে আরবি ভাষা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা উল্লেখ করেন।