ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

শাড়ি-পাঞ্জাবি দিবস

বিএম মিকাইল হোসাইন

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

শাড়ি-পাঞ্জাবি দিবস

‘বাঙালিয়ানাই হোক ঐতিহ্যের পথে ঐক্য’- এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে ৮ ডিসেম্বর ২০২৪, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হলো ‘শা-পা-ডে’-একটি মনোমুগ্ধকর আয়োজন। অনিরুদ্ধ নাট্যদলের দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পোশাক শাড়ি ও পাঞ্জাবির প্রতি ভালোবাসার রঙে রাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল পুরো দিন। শাড়ি আর পাঞ্জাবি, বাঙালির ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই পোশাক যেন বাংলার মাটি, প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা নিজস্ব পছন্দে বেছে নিয়েছিল নানা ধরনের শাড়ি ও পাঞ্জাবি। কেউ সেজেছিল নীল রঙের ছোঁয়ায় বিচিত্র কারুকার্যময় শাড়িতে, কেউ বা পরেছিল ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী সিল্ক, টাঙ্গাইলের শাড়ি, কিংবা ঢাকাই জামদানিতে। অন্যদিকে ছেলেরা বিভিন্ন রং ও ডিজাইনের পাঞ্জাবিতে ছিল সজ্জিত। কারো পরনে ছিল একেবারে সাদামাটা সাদা পাঞ্জাবি ও পায়জামা, যা এই আয়োজনকে অনন্য এক দৃষ্টিনন্দন রূপ দিয়েছিল। ‘শা-পা-ডে’ ছিল শুধু পোশাক প্রদর্শনের আয়োজন নয় বরং এতে ছিল বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীর এক মেলবন্ধন। অনিরুদ্ধ নাট্যদলের শিল্পীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, নাটক ও কবিতা আবৃত্তি যেন পুরো মুক্তমঞ্চকে প্রাণবন্ত করে তুলেছিল। দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেছে বাঙালির ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অনুভূতির মেলবন্ধন। বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে সূর্যের শেষ হাসি পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি চলেছে। গানের সুর, কবিতার আবেগ আর নাটকের গল্পের গভীরতায় দর্শকরা এক অনন্য অনুভূতির অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। অনুষ্ঠান শেষে যেন গোধূলির বন্দনার লাল গোলাপ ছড়িয়ে পড়েছিল সবার হৃদয়ে। একজন ক্যাম্পাস সাংবাদিক হিসেবে এই আয়োজনে উপস্থিত থেকে পুরো অনুষ্ঠানটি দেখা ছিল সত্যিই এক অনন্য অভিজ্ঞতা। শাড়ি-পাঞ্জাবির বৈচিত্র্য যেমন চমৎকৃত করেছে, তেমনি নাট্যদলের শৈল্পিক পরিবেশনা মনকে ছুঁয়ে গেছে। এমন আয়োজন শুধু বাঙালির ঐতিহ্যকে ধারণ করাই নয়, বরং তার প্রতি এক নতুন প্রজন্মের ভালোবাসার পরিচায়ক। ‘শা-পা-ডে’ প্রমাণ করেছে, ঐতিহ্য নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরা সম্ভব এবং তা আরও প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এ ধরনের আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনিরুদ্ধ নাট্যদলের এই প্রয়াস সত্যিই প্রশংসনীয়।

×