ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি। ছবি: সংগৃহীত।
রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে, যার ফলে আনুমানিক ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। দিনভর সহিংসতা চলার পর এ ব্যাপারে বিস্তারিত বিবরণ দেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায়।
অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আজ দুপুর সোয়া ১টার দিকে, ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের প্রথম বর্ষ সম্মান সমাপনী পরীক্ষা চলছিল। ঠিক সে সময়, যাত্রাবাড়ী ডেমরা রোডের ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ (ডিএমআরসি) ও অন্যান্য কলেজের প্রায় এক হাজার ছাত্রের একটি দল কলেজের প্রধান ফটক ভেঙে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তারা ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীদের ওপর আক্রমণ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বারবার পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোন ধরনের সহায়তা পাওয়া যায়নি। মাউশির ডিজি, মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।’’
তিনি আরও জানান, হামলাকারী ছাত্ররা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবন ও শ্রেণিকক্ষে হামলা চালিয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীদের গাড়ি, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য মালামাল ভেঙে দেয়। তারা কলেজের ১৭টি বিভাগের আসবাবপত্র, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার এবং অফিসের বিভিন্ন আলমারি তছনছ করে নগদ অর্থ লুটে নেয়। বই-পুস্তক, শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং মার্কশিটসহ অন্যান্য নথিপত্র পুড়িয়ে দেয়। এমনকি, তারা কলেজের কয়েকটি স্থানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অধ্যক্ষ অভিযোগ করেন, ‘‘ডিএমআরসির অধ্যক্ষকে বারবার ফোন করলেও তিনি সাড়া দেননি। তিনি আগেই জানতেন এই হামলার বিষয়ে, কিন্তু তার পক্ষ থেকে একবারের জন্যও কোনো সহযোগিতা আসেনি। এমনকি, তার বা তার প্রতিনিধির পক্ষ থেকে কোনো খোঁজ-খবর নেওয়া হয়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা শান্তিপ্রিয় এবং কখনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালানোর পক্ষে নয়। কিন্তু যদি কেউ এই পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়, তার জন্য কলেজ প্রশাসন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দায়ী থাকবে না।’’
অধ্যক্ষ একে অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অশোভনীয় ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। ‘‘আমাদের কলেজের এক শিক্ষককে আক্রমণ করে তার গাড়ি ভেঙে দেয়। এ ধরনের তাণ্ডব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’’ তিনি বলেন, ‘‘এটা আমাদের দীর্ঘ ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী কলেজ, এবং এখানে মূল্যবান নথিপত্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ছিল। যদিও ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনও বলা যাচ্ছে না, তবে প্রাথমিকভাবে আনুমানিক ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’’
নুসরাত