
দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বন্ধ থাকা রাজশাহী টেক্সটাইল মিল
দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বন্ধ থাকা রাজশাহী টেক্সটাইল মিল ‘বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড’ হিসেবে পুনরায় যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) সঙ্গে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় মিলটি চালু করতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল। ইতোমধ্যে এটির পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা শিগগির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
সোমবার রাজশাহীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল। তিনি জানান, প্রায় ২৬ একর আয়তনের এ কারখানাকে উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত করতে চায় প্রাণ-আরএফএল। শতভাগ রপ্তানিমুখী এ কারখানায় তৈরি হবে বিভিন্ন ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক। এছাড়া এখানে আধুনিক কল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
দুই বছরের মধ্যে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গত অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরে কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় প্রাণ-আরএফএল। এর তিন মাসের মাথায় কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। আগামী দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে চালু হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি দেশের উন্নয়নে ঢাকাকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
তাই আমরা উত্তরবঙ্গে এই বৃহৎ শিল্প প্রকল্প শুরু করেছি। এর মাধ্যমে রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে এবং স্থানীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে। ‘কারখানাটি হবে সম্পূর্ণ সাসটেইনেবল গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, যেখানে থাকবে সোলার এনার্জি, গ্রিন জোন ও ওয়াটার রিসাইক্লিং ব্যবস্থা। কারখানাটি শতভাগ রপ্তানিমুখী হবে’-বলেন তিনি।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মাল্টি লাইন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, কারখানার পরিত্যক্ত একমাত্র শেড মেরামত করে স্বল্প আকারে জুতা ও ব্যাগ উৎপাদন শুরু হয়েছে। এখানে রাজশাহী অঞ্চলের প্রায় এক হাজার লোক কাজের সুযোগ পেয়েছে। এছাড়া আরও এক হাজার লোক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। রাজশাহীর শ্রমবাজার কাজে লাগিয়ে রাজধানীমুখী প্রবণতা রোধ করাই এ বিনিয়োগের অন্যতম উদ্দেশ্য। আমরা আশাবাদী এ প্রকল্পটি সাফল্য পেলে ভবিষ্যতে রাজশাহী অঞ্চলে আরও বড় পরিসরে বিনিয়োগ ও সম্প্রসারণের পথে এগোতে পারব।