
.
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অতিরিক্ত আবগারি শুল্ক আরোপের ফলে বিমান ভাড়া বেড়েছে। দাম বেড়েছে টিকিটের। এছাড়া ডলারের দামও বেশি। টিকিটের দাম বাড়ায় বেশি বেকায়দায় পড়েছেন রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রবাসী শ্রমিকরা। এ অবস্থায় আগামী বাজেটে শুল্ককর কমানোর দাবি করেছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। সম্প্রতি এনবিআরের সঙ্গে খাত সংশ্লিষ্টদের বৈঠকে বিষয়টি উঠে আসে। এনবিআরের মাত্রাতিরিক্ত ট্যাক্স, এক্সাইজ ডিউটির বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে টিকিটের দামে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশ থেকে একটি প্লেনের টিকিটে এনবিআর থেকে যে পরিমাণ ট্রাভেল ট্যাক্স এবং এক্সাইজ ডিউটি নেয় তা দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যর বিমানবন্দরের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি। ঢাকা থেকে বর্তমানে সিঙ্গাপুর, দুবাই, ওমান, শারজাহ, কুয়ালালামপুর এ পাঁচটি রুটের টিকিট কাটলে যাত্রীপ্রতি বাংলাদেশ সরকার ৯ হাজার ৮৯০ ট্যাক্স আদায় করে। অথচ একই রুটে মালয়েশিয়ার সরকার ট্যাক্স নেয় ২ হাজার ৫৬৮ টাকা, সিঙ্গাপুর ৫ হাজার ৮৭৮, ওমান ৩ হাজার ৮৭৯, দুবাই ও শারজাহ নেয় ৪ হাজার ৩৩২ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে একজন যাত্রী এই পাঁচটি রুটে যাত্রা করলে করলে তাকে ৭ হাজার টাকা বেশি ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। টিকিটের দামের সঙ্গে এনবিআর যেসব ট্যাক্স আদায় করে তারমধ্যে ট্রাভেল ট্যাক্স ৪ হাজার এবং এক্সাইজ ডিউটি ২৫০০ টাকা। ২০২৩ সালের আগে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটের টিকিটে যাত্রীর কাছ থেকে কোনো ট্রাভেল ট্যাক্স নেওয়া হতো না। তবে প্রথমে এটি ২০০ টাকা নির্ধারণ করে পরবর্তী সময়ে এই ট্যাক্স দিগুণ করে বর্তমানে ৪০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া সার্কভুক্ত দেশে ভ্রমণের টিকিটের সঙ্গে বর্তমানে ২ হাজার টাকা ভ্রমণ কর নেওয়া হচ্ছে, যা আগে ১২০০ টাকা ছিল। অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে এই ট্রাভেল ট্যাক্স প্রায় দিগুণ বাড়িয়ে ৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা যাত্রীর টিকিটের দামের সঙ্গে যুক্ত হয়।
জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যসহ কয়েকটি দেশে বিমানের টিকিটের আকাশচুম্বী ভাড়া নিয়ে সরকারকে ভুল বার্তা দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। চাহিদা-যোগানের অসামঞ্জস্য এবং ভাড়া বৃদ্ধির নেপথ্য কারণগুলো আড়াল করে দোষারোপের রাজনীতি চলছে খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর। ফলে দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের আরও উচ্চমূল্যে টিকিট কেনার শংকা তৈরি হয়েছে। টিকিট সিন্ডিকেট ভাঙতে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি আয়কর গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করছেন। তবে এসব আয়োজন ব্যর্থ করতে পাল্টপাল্টি অভিযোগ দাখিল করে নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করতে তৎপর হয়েছেন এ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশ আটাবের দুই পক্ষ।
প্যানেল