ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

সেবার মান ও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে নতুন নীতিমালা জারি 

আউটসোর্সিং কর্মীদের  সুখবর দিল  সরকার 

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:০৬, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

আউটসোর্সিং কর্মীদের  সুখবর দিল  সরকার 

.

দীর্ঘ কয়েক বছর হলো চাকরি স্থায়ীকরণসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে আন্দোলন করে আসছিল আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনে এক দফা দাবির প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা নিজস্ব কার্যালয়ে বৈঠকের মাধ্যমে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। 
মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে নববর্ষের উপহার হিসেবে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরতদের সেবার মান ও সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে নতুন নীতিমালা জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 
নতুন এই নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য হলো আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করা এবং একইসঙ্গে সেবাকর্মীদের উৎসাহিত করা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন নীতিমালায় পাঁচটি সাধারণ ক্যাটাগরি এবং তিনটি বিশেষ সেবার মাসিক সেবামূল্য বাড়ানো হয়েছে।
সেবাকর্মীরা বছরে দুইটি উৎসবে এক মাসের সেবামূল্যের অর্ধেক (৫০ শতাংশ) হারে উৎসব প্রণোদনা পাবেন। আর বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখী প্রণোদনা পাবেন মাসিক সেবামূল্যের এক-পঞ্চমাংশ (২০ শতাংশ) হারে। সেবাকর্মীদের জন্য বার্ষিক ১৫ দিনের ছুটি রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে তাদের মৌলিক কাজের বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে। প্রতি অর্থবছরে প্রতিটি সেবাকর্মীকে দুইটি করে ইউনিফর্ম সরবরাহ করা হবে এবং দায়িত্ব পালনের সময় তা পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নারীকর্মীদের জন্য রয়েছে ৪৫ দিনের মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং নারীবান্ধব কাজে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশনা। সেবাকর্মীদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে নীতিমালায়। তাদের জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকবে। সেবামূল্য সরাসরি কর্মীর নিজস্ব ব্যাংক হিসাব অথবা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে দেওয়া হবে। এবং মাসিক সেবামূল্য পরিশোধ করা হবে কর্মকালীন মাসের পরবর্তী মাসের প্রথম সপ্তাহেই। নীতিমালায় বলা হয়েছে, সেবাকর্মীদের সেবামূল্য ও প্রণোদনার পরিমাণ অর্থ বিভাগের সময়োপযোগী নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। নির্ধারিত সেবাঘণ্টাকে সেবা সময় হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তবে সেবা ক্রয়কারীর চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত সেবার প্রয়োজন হলে, অর্থ বিভাগের সম্মতিক্রমে চুক্তিভিত্তিক অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই তিনি সারাদেশে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর, অধিদপ্তরের সব প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিং প্রকল্পে কর্মরতদের জন্য বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন। 
এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, আপনারা জানেন ‘আমরা দীর্ঘদিন হলো আন্দোলন করে আসছি। আমাদের অনেক সহকর্মী আন্দোলনে আহত হয়েছে, হুমকি, হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন।  সরকারের কাছে আমাদের দাবি ছিল চাকরি স্থায়ীকরণ করা।  আমরা অবহেলিত আউটসোর্সিং, দৈনিক ভিত্তিক ও প্রকল্পভুক্ত কর্মচারী। আমরা কোনো বৈষম্য চাই না, চাই মর্যাদাপূর্ণ জীবন- ধারণের অধিকার এবং ঠিকাদারি প্রথা বাতিল করতে হবে। 
সরকার আমাদের যে সুবিধা দিয়েছেন তাতে আলহামদুলিল্লাহ্। তবে দীর্ঘদিন কর্মরত ব্যক্তির চাকরির নিশ্চয়তা না থাকলে এই সুবিধা দিয়ে কি লাভ। আমাদের কোম্পানির মাধ্যমে নিয়োগে যে কোনো সময় চাকরিচ্যুত করার বিধান বাতিল করতে হবে।   

প্যানেল

×