
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গা । সেজায়গাকে কাজে লাগাতে পারলে ভবিষ্যতে উভয় দেশ বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সহজতর হবে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। স্লোভাকিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে স্লোভাক প্রতিনিধিদল পাঠানোর আহ্বান জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সাহায্যের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
তুরস্কের আন্টালিয়ায় ‘আন্টালিয়া ডিপ্লোমেসি ফোরাম (এডিএফ) ২০২৫’-এর ফাঁকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম এর সঙ্গে স্লোভাকিয়ার পররাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বিষয়ক মন্ত্রী জুরাজ ব্লানারের এক বৈঠককালে এ আহ্বান জানানো হয় বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্লোভাকিয়াকে মোটরগাড়ি শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য স্লোভাক ভিসা সহজতর করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, উভয় পক্ষই অভিন্ন মূল্যবোধ, নীতি এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ ও স্লোভাকিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক আরও গতিশীল করার সুযোগ রয়েছে বলে সফররত বাংলাদেশ প্রতিনিধিরা তাদের মতামত পুনর্ব্যক্ত করেন। এ সময় তারা বিভিন্ন বিষয়ের অভিন্ন স্বার্থে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
স্লোভাক প্রজাতন্ত্র বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ’ মডেল অনুসরণ করতে পারে বলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রস্তাব দেন। বৈঠকে বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে সহযোগিতা বৃদ্ধির উপায় নিয়েও আলোচনা হয়। স্লোভাক মন্ত্রী বি-টু-বি সংযোগ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগের সুযোগ অন্বেষণে বাংলাদেশে একটি ব্যবসায়িক দল পাঠানোর বিষয়ে সম্মতি দেন।
তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং উভয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন। জাতিসংঘের একাধিক প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ তার অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকে দুই উপদেষ্টা সাম্প্রতিক আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের জনগণের দুর্দশায় গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেন। তারা রোহিঙ্গা সংকট ও গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আইসিসির অবস্থানের জন্য সংস্থাটির প্রশংসা করেন। তারা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের ন্যায়বিচার ও সংকটের চূড়ান্ত সমাধানের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও আইসিসির মধ্যে সব ধরনের সম্পৃক্ততার দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অটল অবস্থানের প্রশংসা করেন আইসিসির প্রসিকিউটর।
উল্লেখ্য, আন্টালিয়ায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগানের পৃষ্ঠপোষকতায় ও দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘এডিএফ -২০২৫’ আজ থেকে শুরু হয়েছে, যার এ বছরের প্রতিপাদ্য -‘ভঙ্গুর বিশ্বে কূটনীতি পুনরুদ্ধার’। ফোরামে ২০ জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, ৫০ জনেরও বেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৭০ জনেরও বেশি মন্ত্রী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রায় ৬০ জন সিনিয়র প্রতিনিধির পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ চার হাজারেরও বেশি অতিথি অংশগ্রহণ করেন।
ফারুক