
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ
যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্ক সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে আমরা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছি। আমরা আশা করি, তারা আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবে, যেভাবে আমরা তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছি।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনও উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আরও ১০০ পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমাদের মূল বিষয় হচ্ছে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো। আমরা ওটার ওপরেই কাজ করছি। এ ছাড়া ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটিতে চাল, এলএনজি, সয়াবিন তেল ও মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, শুল্কের বিষয়টি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হবে। আমরা আশাবাদী এই সমস্যার সমাধান হবে। তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে আমরা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছি। আমরা আশা করি, তারা আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবে, যেভাবে আমরা তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছি। সুতরাং, এটি উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। আমরা আমাদের সমস্যা তুলে ধরেছি এবং আমি আশা করি এর সমাধান হবে।
উল্লেখ্য, সোমবার অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের আবেদন তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাতে বাংলাদেশে মার্কিন রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির উদ্যোগটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে তার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠির পর সরকার এখনো কোনো সাড়া পায়নি। তবে আমাদের মূল লক্ষ্য হলো বাণিজ্য ঘাটতি কমানো বা দূর করা এবং আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। কোন পণ্যের ওপর জোর দিয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কীভাবে কমানো যায় সে সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণ পরিচালনা করছি।
শেখ বশির বলেন, আসলে এটি একটি অত্যন্ত পরিবর্তনশীল বিষয় এবং যে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়াও কিছুটা কঠিন। এটি বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আমাদের কৌশলগুলো ঠিক করব।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বশির বলেন, প্রায় ১০০টি পণ্যের ওপর শূন্য আমদানি শুল্ক আরোপের সরকারের পদক্ষেপের ফলে তারা অবশ্যই ইতিবাচক কিছু আশা করছেন। তিনি বলেন, আমরা প্রয়োজনীয় কঠোর পরিশ্রম করছি এবং বাণিজ্য ঘাটতি কীভাবে কমানো যায় তা সমাধানের চেষ্টা করছি।
৫০ হাজার টন চাল, এক কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল, ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে ॥ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির জন্য পৃথক দুইটি দরপত্রের মাধ্যমে ১০ হাজার টন মসুর ডাল ও এক কোটি ২০ লাখ লিটার ভোজ্য তেল ক্রয় করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ সংক্রান্ত দুইটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ২৮০ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এ ছাড়া দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ও সিঙ্গাপুর থেকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ১২০১ কোটি ৪১ লাখ ৪০ হাজার ৩২০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা ৮১ পয়সা দরে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
দেশের খাদ্য চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি অনুমোদন দিলে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক মেসার্স অ্যাগ্রোকরপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এই চাল আমদানি করা হবে।