ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১

ঈদের ছুটিতে চালু থাকবে এটিএম বুথ ও ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা

নাজমুল ইসলাম

প্রকাশিত: ২১:০৬, ২৯ মার্চ ২০২৫

ঈদের ছুটিতে চালু থাকবে এটিএম বুথ ও ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ৯ দিন ছুটির কবলে দেশ। বন্ধ থাকবে ব্যাংকসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তবে লেনদেনের জন্য এটিএম বুথ ও ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা চলমান থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এসকল সেবা সচল রাখতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা থাকলেও অনেক ব্যাংক রয়েছে এই সেবা প্রদানে তেমন আগ্রহ দেখান না। হাতে গোনা কয়েকটি ব্যাংকের এটিএম বুথের লেনদেন সেবা ভালো রয়েছে। অনেক ব্যাংক রয়েছে নিজেদের গ্রাহক ছাড়া অন্যদের টাকা তোলা যাচ্ছে না। আবার অনেক ব্যাংকের বুথ অচল রয়েছে। যে কারণে গ্রাহকরা সেবা বঞ্চিত হয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে।   
সারাদেশে এটিএম বুথ রয়েছে ১২ হাজার ৯৪৬টি এবং ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) রয়েছে ৭ হাজার ১২টি। এটিএম বুথে নিয়মিত টাকা জমা করতে হয়। ঈদের সময় সিআরএমগুলোয়ও এটিএমের মতো টাকা জমা করতে হয়, কারণ এই সময় সবাই টাকা উত্তোলন করে। একটি এটিএমে ২০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জমা করা যায়। ব্যাংকগুলো দুই পদ্ধতিতে এটিএম বুথে টাকা জমা করে। শাখার নিকটবর্তী এটিএম বুথগুলোয় শাখার কর্মকর্তারা টাকা জমা করে থাকেন। দূরের এটিএম বুথগুলোয় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে টাকা জমা করা হয়।
দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এটিএম বুথ রয়েছে ডাচ্বাংলা ব্যাংকের। ব্যাংকটির এটিএম বুথ রয়েছে ৮ হাজার ২৫০টি। এর মধ্যে অনেক ফাস্ট ট্র্যাকের মধ্যে। সব ব্যাংকের গ্রাহকেরা টাকা উত্তোলনের জন্য ডাচ্বাংলা ব্যাংকের এটিএম ব্যবহার করে থাকেন। এবারের টানা বন্ধে গ্রাহকের ভোগান্তি এড়াতে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ফাস্ট ট্র্যাকের কর্মীদের অফিস খোলা রাখছে ব্যাংকটি। এ ছাড়া নিয়েছে আরও বেশ কিছু উদ্যোগ।
এই উদ্যোগগুলো সম্পর্কে জানিয়েছেন ডাচ্বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কাশেম মো. শিরিন। তিনি বলেন, ‘ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আমাদের ফাস্ট ট্র্যাক খোলা থাকবে। কর্মকর্তারা বুথগুলোয় কাজ করবেন। এই সময় পর্যন্ত এটিএমগুলোয় টাকার কোনো ঘাটতি হবে না, সার্বক্ষণিক তদারকি থাকবে।’
আবুল কাশেম মো. শিরিন আরও বলেন, ‘আমাদের সফটওয়্যার আছে, যা দিয়ে এটিএমে টাকা না থাকলে বা কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক বার্তা পাওয়া যায়। এক ঘণ্টার মধ্যে ভেন্ডররা টাকা জমা না করলে আমাদের পর্যায় পর্যন্ত বার্তা আসে। ফলে কী পরিমাণ এটিএম কাজ করছে, তা আমরা জানতে পারি। সাধারণত আমাদের দেড় থেকে দুই শতাংশ এটিএম বুথে এ ধরনের সমস্যা হয়। এটা যেকোনো দেশের চেয়ে কম। পৃথিবীতে ৩ শতাংশ পর্যন্ত এটিএম কাজ না করাকে গ্রহণযোগ্য ধরা হয়।’
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে পূবালী ব্যাংকের শাখা ও এটিএম নেটওয়ার্ক শক্তিশালী অবস্থানে আছে। পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী জনকণ্ঠকে বলেন, ‘এটিএম বুথ সার্বক্ষণিক চালু রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যেসব এটিএম বুথে শাখা থেকে টাকা জমা করে, সেসব বুথে শেষ হয়ে গেলে কিছুটা সময় প্রয়োজন হয়। অন্য এটিএম বুথগুলো তৃতীয় পক্ষ থেকে টাকা জমা করে। টাকা না থাকলে আমরা তাৎক্ষণিক জানতে পারি। ফলে ঈদের ছুটিতে টাকা পেতে সমস্যা হবে না।’
ইসলামী ব্যাংকের এটিএম সংখ্যাও সারাদেশে কম নয়। তাদের প্রায় তিন হাজারেরও বেশি এটিএম বুথ রয়েছে।  
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখা আছে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তার জন্য সিকিউরিটি ব্যাবস্থা আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক বেশিরভাগ এটিএমকে সিআরএমে রূপান্তর করেছে। ব্যাংকটির এটিএম ও সিআরএম রয়েছে ৪৫৮টি। ব্যাংকটির ৮০ শতাংশ এটিএম ও সিআরএম শাখার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ হয় আর ২০ শতাংশ তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে।
সিটি ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) অরূপ হায়দার জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের এটিএম বুথে সার্বক্ষণিক টাকা থাকে। ঈদের বন্ধের মধ্যেও আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করবেন।

×