ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১

ঈদের আগে নিত্যপণ্যের বাজার

পোলাওয়ের চাল সেমাই চিনি দুধ মাংস কিনতে উপচেপড়া ভিড়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:১৬, ২৯ মার্চ ২০২৫

পোলাওয়ের চাল সেমাই চিনি দুধ মাংস কিনতে উপচেপড়া ভিড়

পোলাওয়ের চাল সেমাই চিনি কিনতে উপচেপড়া ভিড়

ঈদের আগে ছুটির দিনে রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। ভোক্তারা সাধ্যমতো মুদিপণ্যের কেনাকাটা করেছেন। পোলাওর চালের পাশাপাশি সেমাই, চিনি, মসলাপাতি, সবজি, মাছ-মাংস সংগ্রহ করেছেন। এ কারণে মাংস ও মাছের বাজারেও ভিড় ছিল লক্ষ্যণীয়। মাংস ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে গরু-খাসি জবাই করে বিক্রির প্রস্তুতি নেন।

এদিন প্রতিকেজি গরুর মাংস বাজারভেদে ৭৬০-৮০০ এবং খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে খুচরা বাজারে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ২২০-২৩০, সোনালি ৩২০-৩৫০ এবং দেশী মুরগি ৫৫০-৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মুদিপণ্যের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন ঈদের আগে ভোক্তাদের কাছে সবচেযে বেশি চাহিদা পাঁচপণ্য- পোলাওর চাল, সেমাই, চিনি, তরল দুধ ও সব ধরনের মাংস। এস পণ্যই বেশি করে কেনাকাটা চলছে বাজারে। 
এদিকে, ঈদের আগে আরেকদফা বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। এ ছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। ভোজ্যতেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসলেও দাম বাড়ানোর ফের পাঁয়তারা করছে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় রাজধানী ঢাকা ফাঁকা হতে শুরু করেছে। এখন যারা বাজারে যাচ্ছেন তারা ঢাকায় ঈদ করার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

ঢাকার কাওরানবাজার, ফকিরাপুল বাজার, কাপ্তান বাজার, যাত্রাবাড়ী বাজার, মুগদা বড় বাজার, খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন মার্কেট এবং গোড়ান কাঁচা বাজার থেকে জানা যায়, ক্রেতারা সাধ্যমতো নিত্য ও মুদিপণ্য কিনতে বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। খিলগাঁও গোড়ান বাজারের মুদিপণ্যের ব্যবসায়ী মোস্তফা টিটু জানান, আর দুদিন পরই ঈদ। এ কারণে ক্রেতারা এখন ঈদের কেনাকাটা করছেন। বিশেষ করে পাঁচপণ্যের দিকে ক্রেতাদের আকর্ষণ সবচয়ে বেশি। 
এগুলো হচ্ছে- পোলাওর চাল, সেমাই, চিনি, তরল দুধ ও সব ধরনের মাংস। এতদিন ইফতারি আইটেমে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি ছিল। কিন্তু এখন ঈদের প্রস্তুতি চলছে। তাই ঈদের দিন যেসব খাবার-দাবার রান্না হবে সেই সব পণ্য বেশি করে কেনা হচ্ছে। ওই বাজার থেকে বাজার করছিলেন খিলগাঁও তিলপা পাড়ার বাসিন্দা কামরুল হাসান। তিনি জানান, ঈদের দিন যেসব বাজার-সদাই লাগবে কেবল সেইসব পণ্য কেনাকাটা করছেন। এ কারণে তাকে সেমাই, চিনি ও মাংসসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী কিনতে হয়েছে।

বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চাল ছাড়া বেশিরভাগ পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে মাংসের দাম কিছুটা বেড়েছে। বাড়তি চাহিদার কারণে দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিকেজি প্যাকেটকৃত পোলাওর চাল ১৫০-১৬০, সেমাই মানভেদে ৬০-৫০০ প্যাকেট, চিনি ১২৫-১৫০, তরল দুধ ব্র্যান্ডভেদে প্রতিলিটার ৯৫-১০০ টাকা টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 
এছাড়া হঠাৎ করে গরমের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজির দামও কিছুটা বেড়ে গেছে। গ্রীষ্মকালীন সব ধরনের সবজি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এসব সবজি কোনোটাই ৮০ টাকা দরের নিচে বিক্রি হচ্ছে না। গ্রীষ্মকালীন সবজি  বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকায়, পটল ১০০ টাকা,  ধুন্দুল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১২০ টাকা, কচুর লতি ১২০ টাকা, সাজনা ১৬০ টাকা ঝিঙা ৮০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে পেঁপেটা প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় এসব বাজারে শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিস, বাঁধা কপি বড় সাইজের ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, পাকা টমেটো কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, মটরশুঁটি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ক্ষিরাই ৮০ টাকা এবং শসা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে লেবুর হালি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ধনে পাতা ১৪০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, চাল কুমড়া ৮০ টাকা পিস এবং মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, মূলা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা, কলমি শাক তিন আঁটি ২০ টাকা, পুঁইশাক ৫০ টাকা এবং ডাঁটা শাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

×