
.
সরবরাহ বাড়ায় নিত্যপণ্যের বাজারে কমেছে ভোজ্যতেলের দাম। এছাড়া দাম কমেছে আলু, পেঁয়াজ ও ছোলার। ডাল, চিনি ও সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে চাল ও মুরগির দাম। গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, কাপ্তান বাজার, যাত্রাবাড়ী বাজার, মুগদা বাজার ও গোড়ান বাজার থেকে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবির তথ্য মতে, দাম কমে প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৫৭-১৬৫, পাঁচ লিটারের প্রতিটি ক্যান ৮৪৫-৮৫০, সয়াবিন তেল বোতল এক লিটার ১৭৫-১৭৬, পামওয়েল খোলা প্রতিলিটার ১৪৫-১৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।
এছাড়া দাম কমে প্রতিকেজি আলু ১৮-৩০, পেঁয়াজ দেশী ৩৫-৫০ ও ছোলা ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি চিনি ১১৫-১২০, ডিম ফার্ম প্রতিহালি ৩৮-৪৫ টাকা এবং দাম বেড়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২২০, দেশী মুরগি ৫৫০-৬৫০, এবং সোনালি ৩২০-৩৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া শীতকালীন সবজির সরবরাহ রয়েছে বাজারে। ফলে, সবজির দাম নতুন করে আর বাড়েনি। তবে গ্রীষ্মকালীন সবজি করল্লা, সজনে ডাটা, ঢেঁড়স এবং কচুরমুখীসহ এই জাতীয় সবজি ৮০-১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি। গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭৮০-৮০০ এবং খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের দাম বেশি। প্রতিকেজি ইলিশ মাছ আকার ও সাইজভেদে ১০০০-২৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, যেসব ফসল ওঠার এখন মৌসুম চলছে, সেগুলোর দাম কমে গেছে। বিশেষ করে পেঁয়াজ ও আলুর এখন ভরা মৌসুম চলছে। এছাড়া গতবছর দাম বেশি হওয়ায় এবছর এ দুটি ফসলের আবাদ বেশি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ফলে, আলু ও পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। দাম কমে প্রতিকেজি আলু ১৮-৩০ এবং পেঁয়াজ মানভেদে ৩৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফলে, কৃষকরাও এখন ন্যায্য দাম পাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে বেড়েছে আলু রাখার হিমাগার খরচ। এ অবস্থায় আলু সংরক্ষণের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক স্থানের কৃষকরা রাস্তায় আলু ফেলে প্রতিবাদ করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষি কর্মকর্তা জানান, যেকোন ফসলের ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে কৃষক ঠকবেন। এতে করে পরবর্তী বছর আবার উৎপাদন কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। গত কয়েক বছর ধরে এই সঙ্কট দেখা যাচ্ছে দেশে। কোনো ফসলের দাম বাড়লে সেই বছর ওই পণ্য উৎপাদনে কৃষকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন, আবার দাম কমলে উৎপাদনে না গিয়ে কমিয়ে দেন। এতে করে আবার সেই পণ্যের দাম বেড়ে যায়।
এজন্য দেশে কোন্ ফসলের কতটুকু চাহিদা রয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান নিরূপণ করা জরুরি। এদিকে, চালের দাম বেড়ে আর কমছে না। বরং একটু একটু করে আবার দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। এ অবস্থায় সাধারণ ও সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়েছে। মোটা চালও বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়।
এছাড়া মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল প্রতিকেজি মানভেদে ৭৫-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীঘ্রই চালের দাম কমবে এমন কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। বরং পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার কথা জানানো হয়েছে।
ঢাকার বাদামতলী ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের চালের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, উৎপাদন স্থলে এখন চালের দাম বেশি। বিশেষ করে দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ ও নওগাঁর মোকামগুলোতে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। তবে সরবরাহ বাড়ায় ভোজ্যতেলের বাজারে ধীরে ধীরে সঙ্কট কেটে যাচ্ছে।