
আয়রন অ্যান্ড স্টিল
আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেট প্রস্তাবে লৌহ শিল্পের কাঁচামাল ৭২১০ হেডিংভুক্ত আটটি পণ্যের ওপর রেগুলারেটরি ডিউটি প্রত্যাহার এবং ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক করার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশন। মঙ্গলবার বাজেট সংক্রান্ত এই প্রস্তাবনাটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ার্যমান কাছে দেওয়া হয়েছে।
এদিন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আমির হোসেন নূরানী বাজেট প্রস্তাবনাটি নিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই সময় সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনটির সভাপতি আবুজার গিফার জুয়েল স্বাক্ষরিত ওই প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে- আয়রন ও স্টিল ব্যবসায়ীরা বহু বছর ধরে দেশের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পের কাঁচামাল সেকেন্ডারি কোয়ালিটি স্টিল কয়েল/সিট পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে গার্মেন্টসের লটের মতো খুবই কম মূল্যে আমদানি করে আসছে। দেশে লোহারখনি বা আকরিক না থাকায় এগুলো আমাদের দেশে উৎপাদিত হয় না। চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কোরিয়া, ভিয়েতনাম, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের সকল দেশ থেকে সেকেন্ডারি কোয়ালিটি স্টিল সিট ও কয়েল বাণিজ্যিকভাবে আমদানি করে থাকে।
বাণিজ্যিক আমদানিকারকরা দেশীয় শিল্প কারখানার মোট চাহিদার ৯৫ ভাগ কাঁচামাল ও অবকাঠামো শিল্পের ১০০ ভাগ কাঁচামাল আমদানি করে ভ্যাট ও ট্যাক্স দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। গ্রাম থেকে শুরু করে শিল্পাঞ্চলসহ সমগ্র বাংলাদেশে প্রায় চার লক্ষাধিক ক্ষুদ্র মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প কারখানা জড়িত রয়েছে। এই বৃহৎ শিল্পের সঙ্গে প্রায় ২৫ লাখের বেশি লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছেন।
এসবখাত উন্নয়নে আমদানি পর্যায়ে আগাম ভ্যাট (এটি) প্রত্যাহারের দাবি করা হচ্ছে, বর্তমান ৫ ভাগ এটি বহাল রয়েছে। বর্তমান ব্যবসায়ী পর্যায়ে সকল বিক্রির ওপর ৫ ভাগ ট্রেড ভ্যাট বহাল আছে। তবে ন্যায্য বাজার মূল্য যাচাই করে মূল্য সংযোজন পরিমাণ হিসেব করে টনপ্রতি ১৫০ টাকা ভ্যাট নির্ধারণের প্রস্তাব করা হচ্ছে। রেয়াদ ব্যবস্থা ও রিটার্ন দাখিল সহজ করতে হবে।
এইচএস কোডভুক্ত পণ্যগুলোর আমদানি শুল্ক ২৫ ভাগ থেকে ১০ শতাংশ করা, আরডি ১০ শতাংশ প্রত্যাহার, ২ লাখ টাকার অধিক বিক্রির ওপর ৬.১০ প্রত্যাহার, ধারা ১২১ এর ২ অনুসারে আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে কোন প্রকার অর্থ পরিশোধ ব্যতিরেকে মামলা দায়েরের অনুমতি, বাণিজ্যিক ও শিল্প উভয়ক্ষেত্রে ৭২০৮,৭২০৯, ৭২১০ এইচ এস কোডভুক্ত পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে প্রতিটন ২৫ হাজার টাকা শুল্ক করার প্রস্তাব, প্রাইম ও সেকেন্ডারি কোয়ালিটি স্টিল আমদানি পর্যায়ে গাইড লাইন প্রস্তাব, এআইটি’র ওপর সাজচার্জ প্রত্যাহার, বাজেট পরবর্তী সময়ে ট্যারিফ মূল্য পরিবর্তন না করার প্রস্তাব, বৃহৎ শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র শিল্প কারখানার উদ্যোক্তাদের জন্য আমদানি, রপ্তানি, এস আরও এবং ভ্যাট সুবিধাসহ বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য সময়োপযোগী সুবিধা প্রদান এবং এইচএস কোডভুক্ত পণ্যে ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন হিসাব করে ৫ শতাংশ ভ্যাট স্লাব নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এনবিআরের পাশাপাশি বাজেট প্রস্তাবটির অনুলিপি অর্থ উপদেষ্টা, বাণিজ্য উপদেষ্টা, শিল্প উপদেষ্টা, ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্য (শুল্কনীতি ও বাজেট) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।