
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এসএমই) শ্রমিকদের বোনাসসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধে ৫০০ কোটি টাকার রপ্তানি প্রণোদনা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সম্প্রতি সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিজিএমইএ প্রশাসক আনোয়ার হোসেন জানান, শীঘ্রই ৩২৫ কোটি টাকা ছাড় দিতে অর্থ মন্ত্রণালয় নীতিগতভাবে রাজি হয়েছে।
সংকটময় অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এসএমইগুলোর আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় ঈদের আগে ব্যাংক ঋণের সঙ্গে প্রণোদনা সমন্বয় না করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের সচিবকে অনুরোধ করেন তিনি। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের সুবিধার্থে অর্থ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত সপ্তাহে পোশাক রপ্তানিকারকদের রপ্তানি রশিদের ওপর দুই হাজার কোটি টাকা নগদ প্রণোদনা দিয়েছে।
আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদের আগে বেতনভাতা পরিশোধ করা জরুরি। এখন ব্যবসা ভালো চলছে না। ব্যবসায়ীরা নানা সমস্যায় হিমশিম খাচ্ছেন। কারখানাগুলোকে ফেব্রুয়ারির বেতন, মার্চের বেতনের অর্ধেক ও ঈদুল ফিতরের পুরো বোনাস দিতে হবে। ব্যবসা ভালো না হলেও খরচ অনেক।
এর আগে গত সপ্তাহে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় রমজানের ২০ তারিখের মধ্যে সব বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশোধের জন্য কারখানাগুলোকে নির্দেশনা দেয়। বিজিএমইএ প্রশাসক জানান, গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও বিজিএমইএর মূল্যায়ন অনুসারে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে প্রায় দেড় শতাধিক কারখানা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি মনে করেন, গত সপ্তাহে নগদ প্রণোদনা বিতরণের ফলে সমস্যা অনেক কমেছে। বিজিএমইএ এখন ৪২ কারখানার আর্থিক সমস্যা সমাধানে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রায় ৩২৫ কোটি টাকা বিতরণ করা হলে এসব কারখানার অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে হয়। শেষ পর্যন্ত তিন থেকে চার কারখানা ভয়াবহ আর্থিক অবস্থার কারণে সমস্যায় পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শ্রমিক অসন্তোষের কারণে পোশাক কারখানাসহ অনেক কারখানা হয় বন্ধ বা সাময়িকভাবে বন্ধ আছে।
উল্লেখ্য, ঈদ সামনে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও গার্মেন্টসখাতে শ্রম অসন্তোষ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর মূল কারণ ঢাকা, আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ চট্টগ্রামের অন্তত শতাধিক কারখানায় বেতন-বোনাস পরিশোধ নিয়ে টালবাহানা শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে শিল্পাঞ্চল ও এর আশপাশে শ্রম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
এ অবস্থায় শ্রমিকদের ২০ রোজার মধ্যে বেতন ও বোনাস পরিশোধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ও বুধবার উত্তরার বিজিএমইএ অফিস ঘেরাও করে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। ওই বিক্ষোভে শ্রমিকরা ঈদের ছুটির আগে বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য মালিকপক্ষকে আহ্বান জানায়।