
২৭ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে দিতে হবে
কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে কী পরিমাণ অর্থঋণ দেওয়া হবে তার নতুন লক্ষ্য ঠিক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ২০২৯ সালের মধ্যে ব্যাংকের মোট ঋণ স্থিতির ২৭ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে দিতে হবে। একই সঙ্গে প্রতিবছর এ খাতে ঋণের পরিমাণ দশমিক ৫ শতাংশ করে বাড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে চলতি ২০২৫ সালের মধ্যে ব্যাংকের মোট ঋণ স্থিতির চলমান লক্ষ্যমাত্রা সিএমএসএমই খাতে ২৫ শতাংশ অর্জন হবে বলেও জানানো হয়।
সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হয়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আমির উদ্দিন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিচালক নওশাদ মুস্তফা, সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
একইদিনে এ সংক্রান্ত একটি মাস্টার সার্কুলার জারি করে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্দেশনা মতে, সিএমএসএমই খাতে মেয়াদি ঋণের পাঁচ বছরের স্থলে সর্বোচ্চ সাত বছর করা হয়েছে।
এছাড়া পাঁচ বছর বা তদূর্ধ্ব মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে প্রকল্পভেদে যেমন কারখানা নির্মাণ ইত্যাদি ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ৬ থেকে ১২ মাস গ্রেস পিরিয়ড দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ খাতে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সহায়ক জামানতবিহীন ঋণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ খাতে সহায়ক জামানত ছাড়া পাঁচ লাখ টাকার অধিক পরিমাণ ঋণ দেওয়া ও নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ব্যাংকার গ্রাহক সম্পর্ক বিবেচনায় সহায়ক জামানত ছাড়া ২৫ লাখ টাকার অধিক পরিমাণ ঋণ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক নওশাদ মোস্তফা বলেন, জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ অনুযায়ী উদ্যোক্তা নির্ণয়ের মানদ- হালনাগাদ করা হয়েছে এবং মাঝারি শিল্প উদ্যোগে ব্যবসা খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন অংশীজন তথা ব্যাংক ও ফিন্যান্স কোম্পানি, চেম্বার ও গ্রাহকদের সুপারিশের ভিত্তিতে সিএমএসএমই ঋণের সর্বোচ্চ সীমা বাড়ানো হয়েছে।
অপ্রাতিষ্ঠানিক বা প্রান্তিক উদ্যোগে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা এবং কুটির, ক্ষুদ্র, মাইক্রো ও মাঝারি উদ্যোগের উৎপাদনশীল খাতে সর্বোচ্চ (কুটির উদ্যোগে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা, মাইক্রো উদ্যোগে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা, ক্ষুদ্র উদ্যোগে সর্বোচ্চ ২৫ কোটি টাকা এবং মাঝারি উদ্যোগের সর্বোচ্চ ১০০ কোটি টাকা) ঋণ সীমা দেওয়া হয়েছে।
সিএসএমই মোট ঋণ ও অগ্রিম স্থিতির অর্জনযোগ্য লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারণ করে ব্যাংক ও ফিন্যান্স কোম্পানির মোট ঋণ ও অগ্রিম স্থিতির মধ্যে সিএমএসএমই মোট ঋণ ও অগ্রিম স্থিতির পরিমাণ ২০২৫ সালে অন্তত ২৫ শতাংশ অর্জন করা। পাশাপাশি প্রতিবছর অন্তত শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধিসহ আগামী ২০২৯ সালের মধ্যে নূ্যূনতম ২৭ শতাংশ অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ক্লাস্টার অর্থায়নে মাঠপর্যায়ের চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে পূর্বে প্রদত্ত লক্ষ্যমাত্রা ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। নারী উদ্যোক্তা খাতে অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা ১৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এছাড়া সেবা খাতের ঋণ স্থির লক্ষ্যমাত্রা আগের ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ এবং ব্যবসা খাতে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে।