
মন্নুজান নার্গিস
লা রিভ ফ্যাশন হাইসের প্রধান নির্বাহী পরিচালক মন্নুজান নার্গিস ফার্মেসি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন। কয়েক বছর চাকরিও করছেন। চাকরিকালীন আয়ের একটা অংশ সঞ্চয় করেন, যা দিয়ে পরবর্তীতে বিনিয়োগ করেন ব্যবসায়। পেয়েছেন পারিবারিকভাবে সম্পূর্ণ সহযোগিতা। জনকণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্নুজান নার্গিস।
আপনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা আপনার পথচলা সম্পর্কে বলুন।
মন্নুজান নার্গিস : আমি ২০০৬ সাল থেকে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করি এবং পরিপূর্ণভাবে লা রিভের আত্মপ্রকাশ ঘটে ২০০৯ সালে। বাবা-মা ও স্বামী সবার সহযোগিতা পেয়েছি। আমি চাই ভবিষ্যতে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও যেন এটি গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারে সম্পূর্ণভাবে। মেইড ইন বাংলাদেশ যেন ভালো প্রডাক্ট হিসেবে সুনাম অর্জন করতে পারে। আমরা সেভাবেই এগিয়ে চলছি। ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুরে লা রিভের আউটলেট আছে। এছাড়াও মালয়েশিয়া, আমেরিকা অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স এবং ইউরোপের দুটি দেশে আমাদের পোশাক রপ্তানি হচ্ছে। মাসিক রপ্তানি আয় প্রায় ১০ হাজার ডলারের মতো। কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে আমাদের প্রতিষ্ঠানে। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা শহরে রয়েছে লা রিভের আইটলেট। বর্তমানে আমরা পোশাকের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যপণ্য নিয়েও কাজ করছি। পোশাকের ক্ষেত্রে সংযুক্ত করেছি এআই প্রযুক্তি। যাতে গ্রাহকরা সহজেই দেখতে পাবেন তাকে কোন ড্রেসে কেমন লাগছে। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম আমরাই এটা শুরু করেছি।
আপনাদের পোশাক তৈরির উপকরণ কি দেশ থেকে সংগৃহীত?
মন্নুজান নার্গিস : না, আমাদের পোশাক তৈরির উপকরণ বিদেশ থেকে আমদানিকৃত। বাংলাদেশের তুলা তৈরির শিল্পকে আরও উন্নত করতে হবে। পাকিস্তানের কটন এ দেশের থেকে অনেক উন্নত। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে শুধু গবেষণার অভাবে। আমার আশা, একসময় বাংলাদেশ ভালো উপকরণ তৈরিতেও সক্ষম হবে। বর্তমানে দেশের খাদি কাপড় খুবই ভালো। তবে রিসার্চের মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরও ভালো কাপড় তৈরি করা সম্ভব।
পোশাক শিল্প নিয়ে কাজ করার আগ্রহের পেছনে কোনো কারণ রয়েছে?
মন্নুজান নার্গিস : আমাদের তিন ভাই-বোনকে মা ছোট থেকে নিজেই পোশাক তৈরি করে দিতেন। মায়ের স্বল্প পরিসরে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও ছিল। তাই শৈশব থেকেই আমার এই শিল্পের প্রতি দুর্বলতা ছিল বললেও ভুল হবে না।
নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য আপনার পরামর্শ।
মন্নুজান নার্গিস : যেসব নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে, তারা যদি আরও অর্গানাইজ হয়ে কাজ করতে পারে তাহলে খুব সহজেই সফলতা আসবে। ব্যবসার পলিসি, প্রোডাক্ট, মার্কেটিং সম্পর্কে পড়াশোনা থাকতে হবে। এতে চ্যালেঞ্জ হবে কম।
নারীরা কি এখনো বৈষম্যের শিকার?
মন্নুজান নার্গিস : নারীরা এখনো বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে মজুরি বৈষম্যের শিকার। অনেক নারী জানেই না যে তার কত মজুরি হওয়া উচিত। নারীদের কাজে থাকে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে তাদের আগে সচেতন হতে হবে। নিজের কাজ সম্পর্কে জানতে হবে।