
বিহার সভাপতি এইচএম হাকিম আলী
দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও অস্থিতিশীলতার কারণে দেশের সামগ্রকি অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন বিহার সভাপতি এইচএম হাকিম আলী। তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হওয়ার ফলে দেশের পর্যটন শিল্প বর্তমানে হুমকির মুখে। আশা করি, সকল প্রতিকুল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে, সরকার অন্যান্য কাজের মতো বাজেট ঘোষণায়-ও সফল হবেন।
আগামী বাজেট পর্যটন খাতে ভর্তুকিসহ এই শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে নানা ধরনের প্রণোদনাসহ পর্যটন শিল্পবান্ধব হবে, এটাই আমি চাই। এই খাতকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারলে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে বলে আমি মনে করি। পাশাপাশি দেশের নতুন নতুন পর্যটন অঞ্চলের উন্নয়ন ও পর্যটন শিল্পের বিকাশে বিদেশী পর্যটকদের বাংলাদেশমুখী করার উদ্যোগ গ্রহণে বাজেটে কার্যকর প্রতিফলন চাই।
সামগ্রিকভাবে দেশের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং পর্যটন বান্ধব বাজেট ঘোষণা হউক, এটাই আমার প্রত্যাশা। বিহার সভাপতি, এইচ এম হাকিম আলী বলেন, ‘বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করা সহজ হবে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্যও নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হবে।
বিহার ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য প্রধান সুপারিশসমূহ ॥ ১. ভ্যাট হ্রাস: বর্তমানে বিক্রয় মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়, যা হোটেল ও পর্যটন খাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিহার প্রস্তাবনা অনুযায়ী, এই হার কমিয়ে ৭ শতাংশ বা এক অঙ্কে আনা হলে শিল্পটি আরও প্রতিযোগিতামূলক হবে এবং পর্যটকদের জন্য সাশ্রয়ী হবে।
২. নগদ প্রণোদনা: হোটেল শিল্পের জন্য বিদেশী মুদ্রা অর্জনের বিপরীতে ৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা প্রদান করা হলে নতুন বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে এবং দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য এটি সহায়ক হবে। ৩. কর স্থগিতকরণ: দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ২০২৪-২০২৫ বাজেট মেয়াদে কর্পোরেট কর, বেতন আয়কর, সম্পূরক শুল্ক (ঝউ) এবং অন্যান্য কর স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এটি বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করবে এবং শিল্প পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।
৪. এস.আর.ও নং ১৩৬-আইন/২০২২/৮৪/কাস্টমস বহাল: নতুন হোটেল নির্মাণ ও বিদ্যমান হোটেলের উন্নয়নকে সহজতর করার জন্য ১ জুন ২০২২ তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন (এসআরও নং ১৩৬-আইন/২০২২/৮৪/কাস্টমস) বহাল রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। ৫. অ্যালকোহল আমদানির শুল্ক হ্রাস: বর্তমানে অ্যালকোহল আমদানির ওপর ২৫০ থেকে ৫৯৯ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়, যা বিদেশী পর্যটকদের জন্য একটি বড় বাধা। বিহা এই শুল্ক কমিয়ে ১০০ শতাংশের নিচে আনার প্রস্তাব করেছে, যাতে বাংলাদেশ একটি আন্তর্জাতিক পর্যটনবান্ধব গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে।
বিহা বিশ্বাস করে যে, এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের আতিথেয়তা ও পর্যটন শিল্প আরও বিকশিত হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি, দেশের নতুন পর্যটন অঞ্চলগুলোর উন্নয়ন ও বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য বাজেটে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। পর্যটন খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব বলে মনে করে বিহা। সরকারের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা, আসন্ন বাজেটে পর্যটন শিল্পকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।