ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

সাকিব-হিরুর শেয়ার কেলেঙ্কারি, কোটি টাকা জরিমানা!

অর্থনৈতিক রিপোর্টার 

প্রকাশিত: ২১:২৪, ২ মার্চ ২০২৫

সাকিব-হিরুর শেয়ার কেলেঙ্কারি, কোটি টাকা জরিমানা!

ছবি সংগৃহীত

ফের শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য ও বিশ্বসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম জড়াল। এবার পুঁজিবাজারে পেপার ও প্রিন্টিং খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেডের শেয়ার কারসাজিতে সাকিবের জড়িত থাকার প্রমাণ পেল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ অনৈতিক কাজে সাকিবকে সহযোগিতা ও নেতৃত্ব দেন সমবায় অধিদপ্তরে উপ-নিবন্ধক ও শেয়ার ব্যবসায়ী আবুল খায়ের হিরু। তাদের গুনছে হচ্ছে মোটা অঙ্কের জরিমানা।

শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাকিব, হিরু, তার পরিবারের সদস্য, সাকিব-হিরুর প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়িক পার্টনার রয়েছেন- এমন ১০ ব্যক্তি এবং ৪ প্রতিষ্ঠানকে মোট ৩১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের শেয়ার কারসাজি করে দাম বাড়ানো হয়। কোম্পানিরর শেয়ার কারসাজিতে সাকিব-হিরুরা বিভিন্ন নামে একাধিক বিও হিসাব খুলে কোম্পানির শেয়ার সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়িয়ে মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে।

পুঁজিবাজারে কয়েক বছর ধরে গুঞ্জন ছিল- সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের শেয়ার নিয়ে কারসাজি চলছে। অবশেষে তদন্ত সাপেক্ষে কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায়েএনেছে বিএসইসি।

বিগত সরকারের আমলে আইন লঙ্ঘন করা শেয়ার কারসাজিকারীদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন যেকোনো ধরনের কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের শেয়ার কারসাজির দায়ে সিকিউরিটির অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(২) এর ক্ষমতাবলে আবুল খায়েরকে ৫০ লাখ টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ৫০ লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ৫০ লাখ টাকা এবং কাজী সাদিয়া হাসানকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেহিসেবে মোট ২ কোটি টাকা জারিমানা ধার্য করা হয়েছে।

আর সিকিউরিটির অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(৫) এর ক্ষমতাবলে আবুল খায়েরকে ২৫ লাখ টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ২৫ লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ২৫ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসানকে ২৫ লাখ টাকা, কাজী ফরিদ হাসানকে ২৫ লাখ টাকা, কাজী ফুয়াদ হাসানকে ২৫ লাখ টাকা, কনিকা আফরোজকে ২৫ লাখ টাকা, সাজিদ মাতবরকে ২৫ লাখ টাকা, মোহাম্মদ বাশারকে ২৫ লাখ টাকা, মোনার্ক হোল্ডিংসকে ২৫ লাখ টাকা, মোনার্ক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টকে ২৫ লাখ টাকা,সাকিব আল হাসানকে ২৫ লাখ টাকা ও সফটভাসন লিমিটেডকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই হিসেবে মোট ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা জারিমানা ধার্য করা হয়েছে।

একইসঙ্গে সিকিউরিটির অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(৫) এর ক্ষমতাবলে আবুল খায়েরকে ২ কোটি টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ২ কোটি টাকা, কাজী সাদিয়া হাসানকে ২ কোটি টাকা, সাজিদ মাতবরকে ২ কোটি টাকা, মোহাম্মদ বাশারকে ২ কোটি টাকা, কনিকা আফরোজকে ২ কোটি টাকা, কাজী ফরিদ হাসানকে ২ কোটি টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ২ কোটি টাকা, মোনার্ক হোল্ডিংসকে ২ কোটি টাকা, মোনার্ক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টকে ২ কোটি টাকা, সফটভাসন লিমিটেডকে ২ কোটি টাকা, সাকিব আল হাসানকে ২ কোটি টাকা এবং জাভেদ এ মতিনকে ২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই হিসেবে মোট ২৬ কোটি টাকা জারিমানা ধার্য করা হয়েছে।

এছাড়া সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি করায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ার অর্জন, অধিগ্রহণ ও কর্তৃত্ব গ্রহণ) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৪(১) এর ক্ষমতাবলে আবুল খায়েরকে ১ লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ১ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসানকে ১ লাখ টাকা, সাজিদ মাতবরকে ১ লাখ টাকা, মোহাম্মদ বাশারকে ১ লাখ টাকা, কনিকা আফরোজকে ১ লাখ টাকা, কাজী ফরিদ হাসানকে ১ লাখ টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ১ লাখ টাকা, মোনার্ক হোল্ডিংসকে ১ লাখ টাকা, মোনার্ক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টকে ১ লাখ টাকা, সফটভাসন লিমিটেডকে ১ লাখ টাকা, সাকিব আল হাসানকে ১ লাখ টাকা এবং জাভেদ এ মতিনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেহিসেবে মোট ১৩ লাখ টাকা জারিমানা ধার্য করা হয়েছে।

আশিক

×