
ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া উভয় দেশই আরো বেশ কিছু পণ্যের বাণিজ্যে আগ্রহী এবং এই কারণে বাণিজ্যের পরিমাণ ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাবে। পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন খান রাজধানী ইসলামাবাদে দেশটির সংবাদ মাধ্যম জং এর সাথে কথা বলার সময় একথা জানান। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমটি।
নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, হাই কমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন খান রোববার দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুর ও ফয়সালাবাদ সফর করেন এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য আরো ত্বরান্বিত করার বিষয়ে তাদের সঙ্গে বিস্তর আলোচনা করেন।
পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের এই হাই কমিশনার পাঞ্জাবের এই দুই শহরে তার সফরকে ফলপ্রসু ও লাভজনক বলে অভিহিত করে।
ছাত্রজনতার গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরপর ইকবাল হোসাইন গত মাসে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং হাসিনা পরবর্তী সময়ে তিনি পাকিস্তানে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রদূত।
হাই কমিশনার ইকবাল হোসাইন খান বলেন বাংলাদেশে পাকিস্তানের অনেক পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং পাকিস্তান বাংলাদেশের অনেক পণ্যের জন্য একটি লাভজনক বাজার। তিনি বলেন, "এটা সন্তোষজনক যে ১৫ বছরেরও বেশি সময় পর দুই ভাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্য পুনরায় শুরু হয়েছে।" পাকিস্তানের তুলা, চিনি, চাল, পোশাক বিশেষ করে লেডিস ড্রেস, ফল বিশেষ করে আমের প্রচুর চাহিদা বাংলাদেশে রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ আনারস, পাট, ওষু্ পোশাক পাকিস্তানে রপ্তানি করতে পারে।
হাই কমিশনার বলেন দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও বাণিজ্য বৃদ্ধির সীমা হলো আকাশ। ইতোমধ্যেই পাকিস্তান তার ন্যাশনাল ক্যারিয়ারের মাধ্যমে বাংলাদেশে ২৫০০০ মেট্রিক টন চালের প্রথম চালান রপ্তানি করেছে। ট্রেনিং কর্পোরেশন অব পাকিস্তানের মাধ্যমে মোট ৫০০০০ মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করা হবে। বাকি। ২৫০০০ মেট্রিক টন চাল রপ্তানি হবে আগামী মাসে। বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন চাহিদা মেটাতে সরকার টু সরকার ভিত্তিতে পাকিস্তান থেকে চাল কেনার আগ্রহ দেখানোর পরে টিসিবি গত বছরের ডিসেম্বরে একটি দরপত্র জারি করেছিল। এছাড়া আরেকটি দরপত্রে কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে চাল বিক্রির আগ্রহ প্রকাশের জন্য ২৭ ফেব্রুয়ারি সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে।
দরপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ৬০ শতাংশ চাল চট্টগ্রাম বন্দরে এবং ৪০ শতাংশ চাল আরেক সমুদ্র বন্দর মংলা বন্দরে সরবরাহ করা হবে। আর এই চালান করাচি বন্দরের মাধ্যমে পাঠানো হবে। চাল অবশ্যই ৫০ কিলোগ্রাম পলিপ্রোপিলিন ব্যাগে প্যাক করতে হবে এবং ব্রেক বাল্ব কার্গোতে পাঠাতে হবে।
প্রসঙ্গত ছাত্রজনতার ব্যাপক বিক্ষোবের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচুত হয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। হাসিনার পতন ও দেশ ছেড়ে ভারতে পলায়নের পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের উষ্ণতা এবং বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আবীর