
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন, সুষম শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তিন ধাপের মহাপরিকল্পনা করছে। খসড়া ‘অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর জাতীয় মহাপরিকল্পনা’র অংশ হিসেবে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ২০৪৬ সালের মধ্যে দেশে ২০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বেজা।
রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বেজার কার্যালয়ে ‘অর্থনৈতিক অঞ্চল অগ্রাধিকার ও পর্যায়ক্রমে, অফসাইট অবকাঠামো পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া’ শীর্ষক কর্মশালায় এ কথা জানানো হয়। বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রণয়ন করা মহাপরিকল্পনা অনুসারে, এটি পর্যায়ক্রমে ভূমি অধিগ্রহণ, অবকাঠামো প্রস্তুতি ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা সম্পর্কিত সংকট দূর করতে সহায়তা করবে।
এর ফলে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো কাঠামো বদ্ধ ও টেকসই উপায়ে বিকশিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে বেজা ব্যাপক শিল্পায়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের পর ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু হয়েছে।
এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে চট্টগ্রামের জাতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল ও সিলেটের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল সরকারিভাবে পরিচালিত। বাকিগুলো পরিচালিত হচ্ছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো হলো- সিটি ইকোনমিক জোন, মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন, মেঘনা ইকোনমিক জোন, হোশেন্দি ইকোনমিক জোন, আব্দুল মোনেম ইকোনমিক জোন, বে ইকোনমিক জোন, আমান ইকোনমিক জোন ও ইস্ট ওয়েস্ট ইকোনমিক জোন।
বেজার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ কাজ করছেন। এর মধ্যে সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে সাত হাজার ও বেসরকারি অঞ্চলে প্রায় ৫৩ হাজার কর্মী আছেন। এতে আরও বলা হয়, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য উৎপাদিত হয়েছে।
কর্মশালায় বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী এই মহাপরিকল্পনাকে সফলতা, প্রবৃদ্ধি, উদ্ভাবন ও টেকসই শিল্পায়নের কর্মকৌশলে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তার মতে, বেজা শুধু অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছে না। দেশের ভবিষ্যৎ গঠন করছে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন টেকসই প্রবৃদ্ধি বাড়াতে অর্থনৈতিক নীতি যৌক্তিক করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। মহাপরিকল্পনার উপস্থাপনা অনুসারে, প্রথম ধাপে চলতি অর্থবছর থেকে ২০২৯-৩০ অর্থবছর পর্যন্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে রাস্তাঘাট তৈরি, বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানি ব্যবস্থাপনা ও টেলিযোগাযোগের ওপর জোর দিচ্ছে বেজা। ২০৩০ সালের মধ্যে এই অঞ্চলগুলোয় তিন লাখের বেশি মানুষের কাজের সুযোগ হবে। রপ্তানি আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। বিশ্ব বাণিজ্যে দেশের অবস্থান শক্তিশালী হবে।