![বিভিন্ন খাতে রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ বিভিন্ন খাতে রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/art-5-2502111907.jpg)
বিভিন্ন খাতে রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াতে কর্মপরিকল্পনা
এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে তৈরি পোশাকের বাইরে অন্যান্য প্রধান রপ্তানিখাতগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে নগদ প্রণোদনার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সহায়তার ধরন নির্ধারণে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাতগুলোকে তুলে ধরতে একটি প্ল্যাটফর্মের রূপরেখা প্রণয়ন করবে সরকার।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং এফবিসিসিআই-এর প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
কমিটির আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আংশিক প্রতিবেদন দাখিল করার কথা রয়েছে। এই কমিটি সম্ভাবনাময় এসব খাতের রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির অন্তরায়গুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি কোন ধরনের আর্থিক ও অ-আর্থিক নীতি সহায়তা দেওয়া যায়, সে বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ করবে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের পর রপ্তানি প্রণোদনা বন্ধ হলে খাতগুলো কোন ধরনের সমস্যায় পড়বে এবং সেসব সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় নির্ধারণ করবে কমিটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের সাবেক মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, বহুবছর ধরে রপ্তানি বহুমুখীকরণের নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও এসব সম্ভাবনাময় খাত নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কমিটি কাজ করেনি। তিনি বলেন, তাই এলডিসি-উত্তরণের আগে এ ধরনের কমিটি গঠনের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় এসব খাতে বিশেষ প্রণোদনার উদ্যোগ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনার হার খুবই কম এবং এলডিসি-উত্তরণের কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। কারণ, প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নে ২০২৯ সাল পর্যন্ত জিএসপি সুবিধা বহাল থাকার পর জিএসপি প্লাস পাওয়া যাবে। অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের পণ্য রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তার হার অনেক বেশি।
কোন কোন খাতে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা রয়েছে। ‘এসব খাতের জন্য বিকল্প প্রণোদনার ব্যবস্থা না করলে ২০২৬ সালে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর খাতগুলোর রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে কমিটির একজন সদস্য টিবিএসকে জানান, গত অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের সময় প্রতিটি খাতের নগদ সহায়তা কমানো হয়েছে।
সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জুনে সরকার যে বাজেট ঘোষণা করবে, সেই বাজেটে নগদ সহায়তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা ছিল। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে যে, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর নগদ সহায়তা বন্ধ হয়ে গেলে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং তা মোকাবিলায় বিদ্যুৎ বিলে ভর্তুকিসহ বিকল্প প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ এসেছে,’ বলেন তিনি।