
শেয়ারবাজারে পুঁজি রক্ষায় কাল মহাসমাবেশ
শেখ হাসিনার পতনের পর রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ এগিয়ে চললেও পিছিয়ে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। বিনিয়োগকৃত টাকা হাওয়া হয়ে যাওয়া এবং আস্থাহীনতা চরম পর্যায়ে চলে যাওয়ায় আগামীকাল সোমবার মতিঝিলে প্রতিবাদ মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমআইএ)।
শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের পুঁজি রক্ষার এই মহাসমাবেশ করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। এই মহাসমাবেশে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতিনিধিদল সমাজের নানাস্তরের মানুষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত থাকবেন।
শনিবার ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মহাসমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে সারাদেশের সব বিনিয়োকারীকে মহাসমাবেশে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান মুখপাত্র মো. নূরুল ইসলাম মানিক, সিনিয়র মুখপাত্র এস এম ইকবাল হোসেন এবং মুখপাত্র মো. ফরিদ আহমেদ।
মহাসমাবেশে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, সোমবার দুপুর ২টায় ঢাকার মতিঝিলে ডিএসই ভবনের সামনে প্রতিবাদ মহাসমাবেশ হবে। এতে অংশ নেবেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শফিকুল ইসলাম মাসুদ, শেয়ারবাজার বিশ্লেষক মো. ফজলুল বারী এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা মো. দিদারুল আলম ভূঁইয়া।
সংগঠনের প্রধান মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে শেয়ারবাজারে ৯৯ শতাংশ বিনিয়োগকরী ক্ষতিগ্রস্ত। এসব বিনিয়োগকারীর পুঁজি রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান নেতৃত্ব কোনো ভূমিকা রাখছে না। বরং তারা যেন শেয়ারবাজার ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে নেমেছে।
তিনি বলেন, আগামী সোমবার আমরা মহাসমাবেশ করব। এই সমাবেশে ব্রোকারেজ হাউসের কর্মী ও বিনিয়োগকারীরা যাতে অংশ না নেয়, সেই হুমকি দিয়ে বিএসইসি থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সিনিয়র মুখপাত্র এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, পুঁজিহারা বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরিয়ে আনার জন্য যা করার, যেখানে যাওয়ার- আমরা তাই করব।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে লুটতরাজ চলছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সবকিছু মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু ৫ আগস্টের পর নতুন আশা জাগে। বিনিয়োগকারীরা ভেবেছিল আওয়ামী লীগের আমলে যে লুটতরাজ হয়েছে, সবকিছু পুষিয়ে আমরা লাভের দিকে যাব। বিরাট পরিবর্তন হবে, এটাই আশা ছিল। সেটাই হচ্ছিল। তিনদিন বাজার ভালো ছিল।
কিন্তু তারপর নিয়ন্ত্রক সংস্থায় এমন লোকদের দায়িত্ব দেওয়া হলো যারা বিনিয়োগকারীদের ধ্বংস থেকে আরও ধ্বংস করছেন। ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যা হয়েছে, গত পাঁচ মাসে তার থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। পাঁচ মাসে ৬৬ হাজার কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে। এর জবাব কে দেবে?
এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, ৩ ফেব্রুয়ারি মহাসমাবেশ করার পর পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আমরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেব। এর আগে কোনো স্মারকলিপি দেইনি।