ফিসক্যাল ডিসিপ্লিন ঠিক না হলে এনবিআরের ওপর চাপ কমবে না বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম ও ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস্ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত "এনবিআর সংস্কার" শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বে যারা আসবেন তাদের ঠিক করতে হবে যে, আমি ঋণ করে ঘি খাবো কি না। অতিরিক্ত কর আদায়ও ঋণ করে ঘি খাওয়ার মত। এটি ঠিক না হলে সংস্কার বাস্তবায়ন হবে না।
তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, এনবিআরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনতে হবে। এ বিষয়ে আপনাদের প্রস্তাব দিতে হবে। আমরা যে ইএফডি আনতে পারিনি। এটার জন্য কাকে দায়বদ্ধ করে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? এখানে কেউ না কেউ তো দায়বদ্ধ। চার্টাড অ্যাকাউন্টেট ভুল অডিট করলেও তাদেরও দায় নিতে হবে।
করপোরেট ট্যাক্স ফাইলিং আধুনিকায়ণ হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ডিভিএসের সঙ্গে মিলিয়ে এটি করা যেতে পারে। নিজেদের মধ্যে ও তথ্যে আদান-প্রদানে সমন্বয় নেই। বাড়ি ও সম্পদের মালিক কী পরিমাণ কর দিচ্ছে তা বের করার কোনো উপায় নেই। এই সংস্কারগুলো প্রয়োজন। এ তথ্যগুলো বের করা খুব বেশি কঠিন না।
তিনি বলেন, একটা ঘুস প্রথা আছে, যার মাধ্যমে মেইনটেইন করা হয়। কর কমালেও কর ফাঁকি কমবে না। ভ্যাটর হার ১৫ থেকে ১০ শতাংশ করলেও সবাই দেবে না। ১০ এর নিচে হলেও উনারা (ব্যবসায়ীরা) দেবেন না। সেখানে স্বচ্ছতা আনতে হবে। নাগরিকদের দায়বদ্ধতার মধ্যে আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কর আদায় হলেও তার ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। রাজস্ব আদায়ে নানা সমস্যা আছে। এনবিআরের কর কর্মকর্তাদের বিবেচনামূলক দায়িত্ব, যৌক্তিক হারে কর আদায় ঠিক করতে হবে। ১৫ শতাংশের জায়গায় ১০ শতাংশ দিলেও কর দিতে চায় না। আরজিএসসি রেজিস্ট্রার্ড কোম্পানির ক্ষেত্রে মোট কর ৪৫-৪৬ শতাংশের কম কোথাও নেই। একজন বললো তাতে ৮৩ শতাংশ কর দিতে হয়। অর্থাৎ ১০০ টাকায় ৮৩ টাকা দিতে হয়। এগুলো ঠিক করতে হবে।
প্রধান আলোচক হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব ড. মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনায় আরও অংশগ্রহন করেন, এনবিআর সংস্কার বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও এনবিআরের (কাস্টমস এন্ড ভ্যাট ডিপার্টমেন্ট) সাবেক সদস্য ড. মো. ফরিদ উদ্দিন, এনবিআর সংস্কার বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও এনবিআরের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মারিয়া হাওলাদার, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ও এনবিআর সংস্কার বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. নাসিরুদ্দিন আহমেদ, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার, 'পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ' এর চেয়ারম্যান ও সিইও ড. মো. মাশরুর রিয়াজ, দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চ্যাম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, দৈনিক সমকালের এসোসিয়েট এডিটর জাকির হোসেন, এবং ইকোনোমিজ রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) এর সভাপতি দৌলত আক্তার মালা প্রমুখ।
শিহাব