ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানো ঠিক হয়নি: সহিদুল হক মোল্লা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার 

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১২:৪৬, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানো ঠিক হয়নি: সহিদুল হক মোল্লা

মো. সহিদুল হক মোল্লা

হঠাৎ করে শতাধিক পণ্যে শুল্ক-কর আরোপের সমালোচনা করে এফবিসিসিআইয়ের সদ্য বিদায়ী পরিচালক মো. সহিদুল হক মোল্লা  বলেছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এবার তা না করে শুধু একটি প্রজ্ঞাপন দিয়ে নতুন শুল্ক-কর ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াসহ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। অথচ ভোক্তা সমাজ আশা করছিল, অন্তর্বর্তী সরকারের এই সময়ে জিনিসপত্রের দাম কমবে। গত সরকারের সময় মানুষ বাজারে স্বস্তি পায়নি। এখন শুল্ক-কর বাড়ানোর ফলে দ্রব্যমূল্যে অস্বস্তি আরও বাড়বে। 

তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন (এ্যাপেক্স বডি) এফবিসিসিআইকে সক্রিয় করা প্রয়োজন। নির্বাচিত বোর্ড থাকলে এখন এফবিসিসিআই থেকেই ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ, প্রত্যাহার কিংবা সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)  সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ পেতেন ব্যবসায়ীরা। এজন্যই দেশের সাড়ে পাঁচ কোটি ব্যবসায়ীদের মাদার সংগঠন হিসাবে খ্যাত এফবিসিসিআইতে দ্রুত নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। আশা করি, বর্তমান প্রশাসক দ্রæত নির্বাচনের আয়োজন করবেন।’ 

মোল্লা মেশিনারিজ অ্যান্ড মোল্লা মটরসের স্বত্বাধিকারী, মোল্লা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও চুয়াডাঙ্গা জেলার এ পর্যন্ত বহু বারের সর্বোচ্চ কর ও ভ্যাট দাতা হিসেবে তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা সব সময় সরকারকে ভ্যাট ও ট্যাক্স দিয়ে সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও করবেন। তবে চাপিয়ে দেওয়ার ফল কখনো ভালো হয় না। এজন্যই বলছি আলাপ-আলোচনার উদ্যোগ নিন, ব্যবসায়ীদের কথা শুনুন। 

বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল মেশিনারী মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বামমা) ও বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল মটরপাম্প ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের এই শীর্ষ নেতা আরও জানান, অনলাইন ও অটোমেশনের এই যুগে ভ্যাট ও কর না দিয়ে আসলে ব্যবসা করার সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীরা সব সময় যৌক্তিক ভ্যাট ও ট্যাক্স আরোপের পক্ষে। শুল্ক-কর দিয়েই তারা ব্যবসা করছেন এবং দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক একটি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা ছয় মাসের জায়গায় তিন মাস করা হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি। কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ এক বছর করা হউক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা তাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পারেন। অন্যথায় অর্থনীতি বিপর্যের মুখে পড়বে, ব্যবসায়ীরা খেলাপি হয়ে পড়বেন।’

তিনি বলেন, ‘অবৈধ পন্থায় যারা বিদেশে টাকা পাচার করেছেন তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে  সরকারকে কঠোর হতে হবে। একইভাবে যারা ব্যাংকের টাকা মেরে দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ খেলাপি হয়েছেন তাদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।’

এম হাসান

×