ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১

ব্রয়লার মুরগিতে ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি, সময় এলো বয়কটের 

প্রকাশিত: ১৪:৪৮, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

ব্রয়লার মুরগিতে ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি, সময় এলো বয়কটের 

ব্রয়লার মুরগি

ব্রয়লার মুরগি বয়কট করার সময় কি ঘনিয়ে এলো? মানবদেহের জন্য অদৃশ্য এক বিপদের নাম এই ব্রয়লার মুরগি, যা এখনই হয়তো বয়কট করার সময় ঘনিয়ে এসেছে। বর্তমান সময়ের খাদ্যাভ্যাসে ব্রয়লার মুরগি একটি সাধারণ নাম। সস্তা, সহজলভ্য এবং দ্রুত প্রস্তুত যোগ্য হওয়ায় এটি আমাদের দৈনন্দিন খাবারের জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু এই স্বল্প সময়ে বড় করা মুরগির স্বাস্থ্য ঝুঁকি কতটা মারাত্মক তা অনেকেই জানেন না বা জানলেও এড়িয়ে যান।

খাদ্য হিসেবে ব্রয়লার মুরগি ব্যবহারের ফলে আমাদের শরীরে কী ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা নিয়ে বিশ্লেষণ অত্যন্ত জরুরি। ব্রয়লার মুরগি মাত্র ৩০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে। স্বাভাবিক মুরগি এই সময়ের মধ্যে এতটা বড় হতে পারে না। দ্রুত বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এদেরকে উচ্চ মাত্রার স্টেরয়েড অ্যান্টিবায়োটিক এবং বিভিন্ন কৃত্রিম উপাদান দেওয়া হয়। এই উপাদানগুলো মুরগীর মাংসে থেকে যায়, যা পরে মানুষের দেহে প্রবেশ করে। ফলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে থাকে এবং দীর্ঘ মেয়াদে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হয়। ব্রয়লার মুরগি নিয়মিত খাওয়ার ফলে বিভিন্ন রোগ ও শারীরিক সমস্যার সম্ভাবনা বাড়ে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম।

বিশেষ করে কিশোরী ও প্রজননক্ষম নারীদের মধ্যে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। ব্রয়লার মুরগিতে থাকা হরমোন সমৃদ্ধ উপাদানগুলো মানবদেহে ঢুকে এমন সমস্যা সৃষ্টি করে। এরপরে হচ্ছে থাইরয়েডের সমস্যা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যক্রম হ্রাস বা অতিরিক্ত বৃদ্ধি হরমোন ভারসাম্যের অভাবে ঘটে। ব্রয়লারের মাংসে ব্যবহৃত কৃত্রিম হরমোন এই সমস্যার মূল কারণ হতে পারে অ্যালার্জি এবং সর্দি কাশি। ফার্মের মুরগি থেকে শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের সমস্যা তৈরি হয়। ফলে শিশুরা প্রায়শই ঠাণ্ডা কাশি এবং অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগতে থাকে।

হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপ ব্রয়লারের মাংসে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। নিয়মিত এসব খাবার ফলে কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এর বিকল্প খাদ্যাভ্যাস কী হতে পারে? ব্রয়লার মুরগির ক্ষতিকারক প্রভাব এড়াতেই আমাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। পালিত দেশি মুরগি বা সোনালী মুরগির ডলারের চেয়ে স্বাস্থ্যকর বিকল্প। তবে তা সহজলভ্য না হলেও মাংসের বিকল্প হিসাবেও নির্ভর করা যেতে পারে কিছু খাদ্য উপাদানগুলোর উপর। যেমন- ডাল এবং শাকসবজি, সীমের বিচি এবং কচুতে উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও আয়রন রয়েছে। সঠিকভাবে রান্না করলে এগুলো মাংসের সম পরিমাণ পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে। 

কলার মোচা বোনা বা কাঁঠালের বীজ মাংসের বিকল্প হতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। যারা মাংস খেতে চান তারা পানি তো মহিষের মাংস বেছে নিতে পারেন। এটি তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ। 

এখন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয় কী? মুরগি ব্যবহারের ক্ষতিকারক প্রভাব শিশুদের ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করে তুলছে। সময় মতো সচেতন না হলে ছোট বড় সবাই এলার্জি বা হরমন জনিত সমস্যায় ভুগতে পারেন। আমাদের উচিত খাদ্য তালিকায় বিকল্প খাদ্য উপাদান অন্তর্ভূক্ত করা। 

সূত্র: https://www.facebook.com/watch/?v=1027575289139168&rdid=KhOucByiHm4gWC0a

এম হাসান

×