নিত্য পণ্য ক্রয়।
বাজারে স্পষ্ট হয়েছে ভ্যাট বৃদ্ধির নেতবাচক প্রভাব। পণ্য ও সেবায় গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। কমেছে বিক্রি, চাহিদায় লাগাম টেনেছে ভোক্তা। নজিরবিহীন ভ্যাট বৃদ্ধিতে জীবনযাত্রায় ঘটেছে ছন্দপতন। এতে মানুষের মাঝে বাড়বে অস্থিরতা। আইএমএফ এর চাপে হঠাৎ করে এমন ভ্যাট বৃদ্ধি করা কতটা নৈতিক? বিকল্প কি আর উপায় ছিল না?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো পক্ষের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত টেকসই পন্থা নয়। এর ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে। কঠিন হবে জীবন ধারণ।
এতদিন আমদানী নির্ভর প্রতি কেজি আপেল কমলা কিংবা মালটার জন্য সরকারকে শুল্ক দেওয়া হতো ১০১ টাকা। কিন্তু ঢালাও শুল্ক বৃদ্ধির ফলে এখন দিতে হচ্ছে ১১৬ টাকা। গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে মূল্য সংযোজন কর বাড়িয়ে দেওয়ার পর ফলের বাজারে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। কেজিতে সব ধরণের ফলের দাম বেড়েছে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
ভোক্তারা অভিযোগ করে জানান, এভাবে দাম বাড়লে বাচ্চাদের ও পরিবারের জন্য ফল কিনতে পারবেন না। ফলে দেখা দিতে পারে পুষ্টিহীনতা।
এদিকে, ভ্যাট বাড়ার কারণে রেস্টুরেন্টেও তুলনা মূলক বেশি খরচ গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি বাড়ার ফলে আমরা যে ধুকে ধুকে মরে যাচ্ছি সেই দিকে কোন নজর নাই। তারপরও দেখা গেল মরার উপর খরার ঘা, ১৫% ভ্যাট চাপিয়ে দেওয়া হলো। তিনগুন ভ্যাট কার সঙ্গে কথা বলে তারা যুক্ত করেছে?’
সহজ পন্থায় ক্রেতার পকেট থেকে কমপক্ষে হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়াই সরকারের উদ্দেশ্য। আইএমএফ এর চাপে শুল্ক বৃদ্ধি করা কতটা নৈতিক?
এ বিষয়ে গবেষণা পরিচালক, বিআইআইসিসি ড. মাহফুজ কবীর বলেন, ‘অতিরিক্ত পরিমানে রাজস্ব আদায় করার জন্য হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেক্ষেত্রে সামজিক যে ন্যায্যতার জায়গা সেটাকে লঙ্ঘিত করে। যারা নতুন বিনিয়োগের চিন্তা ভাবনা করছেন তাদেরকে সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা এটাও আরেক ধরনের অন্যায্যতা। আবার ব্যাংকগুলো যে তারল্য সংকট রয়েছে, সেখান থেকে নেওয়া যাচ্ছে না এবং বিদেশ থেকেও কোনো সহায়তাও আসছে না। সব মিলিয়ে সরকারের হাতে এই মুহূর্তে অর্থ নেই।’
অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, ‘আমাদের প্রথমেই চোখ পরেছে যে, আমরা ভ্যাট ট্যাক্স যদি বাড়িয়ে দেই তাহলে আইএমএফ এর রাজস্ব সারে ১২ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে পারবো। কিন্তু বাস্তবে এটা কতটুকু পারবে, সেটা যথেষ্ট সন্দেহ। ভ্যাট বাড়ানোর ফলে পুরো চাপটা আসবে জনহণের উপর। কিন্তু পুরোটা সরকারের কাছে যাবে না, ফাঁক ফোঁকর দিয়ে অনেকটা বের হয়ে যাবে।’
সূত্র: যমুনা টিভি। https://www.youtube.com/watch?v=hejK21IVDHE
এম হাসান