ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১

গভর্নরের সঙ্গে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ ও বিজিএমইএ’র বৈঠক

দেউলিয়া আইনের পরিবর্তন চান ব্যবসায়ীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:১৩, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

দেউলিয়া আইনের পরিবর্তন চান ব্যবসায়ীরা

দেউলিয়া আইনের পরিবর্তন চান ব্যবসায়ীরা

দেশের শিল্পখাতে এমনিতেই জ্বালানি সংকটে ব্যাহত হচ্ছে। তার ওপর গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব। সঙ্গে রয়েছে ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বন্ধের পথে অনেক শিল্প-কারখানা। নতুন বিনিয়োগেও নেমে এসেছে স্থবিরতা। চলমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিতে চাচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ী।

যে কারণে নতুন নীতিমালা চান তারা। বিশেষ করে দেউলিয়া আইনের পরিবর্তন চান তারা।  রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সমস্যা নিয়ে বৈঠক করেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ-বিসিআই ও বিজিএমইএ।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, খেলাপি ঋণের নতুন নিয়ম এপ্রিল থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্তে হতাশ তারা। তাদের দাবি, ব্যাংকের একক গ্রাহকের ঋণসীমা ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করতে হবে। এছাড়া রপ্তানি আয়ের ওপর নগদ প্রণোদনা প্রাপ্তিতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা হয় তা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে পাওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। 
বর্তমানে একটি ব্যাংক ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে একজন গ্রাহককে মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। এর আগে সীমা ৩৫ শতাংশ ছিল, পরিবর্তন করে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২২ সালে। পাশাপাশি বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধাসহ ঋণ থেকে প্রস্থান-সংক্রান্ত নীতিমালা (এক্সিট পলিসি) প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এ সময় বিজিএমইএ’র প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন, বিসিআই’র পরিচালক ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, এলএফএমইবি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল হাসান সোইল, রাভিডার সভাপতি আব্দুল হক, বিসিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মইনুল ইসলাম স্বপন, সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসান, কোকাকোলা বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদাপ আহমেদ, বিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রিতি চক্রবর্তী, সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, একসঙ্গে ঋণের সুদহার বাড়ানো, গ্যাসের দাম বাড়ানো, বেতন বাড়ানো, প্রণোদনা দেন- এভাবে ব্যবসা চালানো কঠিন। কোনো দেশে এমনটা নেই। এজন্য আমরা চাই বড় শিল্পের জন্য এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১২ বছরের ঋণ সুবিধা এবং ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে পুনঃতফসিলের সুযোগ রাখা হোক। ছোট শিল্পের জন্য এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৫ বছরের ঋণ সুবিধা চাই, যেখানে এক শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে পুনঃতফসিলের সুবিধা থাকবে। এজন্য পৃথক সার্কুলার দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের মর্টগেজ সম্পদ বিক্রির জন্য অনুমোদন নিতে হবে। ব্যাংকের একক গ্রাহকের ঋণসীমা আগের অবস্থানে নেওয়ার দাবি জানাই। একটি ব্যাংক বর্তমানে ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে একজন গ্রাহককে মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। এর আগে এ সীমা ৩৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও তা পরিবর্তন করা হয়েছিল। এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন, বিশেষ করে এলসির (ঋণপত্র) ক্ষেত্রে।
তিনি জানান, নগদ প্রণোদনার জন্য যে কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জমা দিতে ন্যূনতম ৯ থেকে ১২ মাস সময় লাগে, এরপর বিতরণ করতে ৮ থেকে ১২ মাস সময় লাগে। এ সময় নামিয়ে আনতে হবে ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে। ব্যাংক সুদের হার ৯ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা, যে সংকট সমাধান করা অসম্ভব।

×