দর্শনার্থীদের মেলায় প্রবেশের সুবিধার্থে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে চলছে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। প্রথমবারের মতো দর্শনার্থীদের মেলায় প্রবেশের সুবিধার্থে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তবে এভাবে টিকিট কাটতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা।
ক্রেতা-দর্শনার্থীরা বলছেন, সার্ভার গোলযোগ, ভিড়, মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যা, ডিজিটাল ব্যবস্থায় অভ্যস্ত না হওয়াসহ নানান কারণে সুবিধার চেয়ে বিড়ম্বনা বাড়াচ্ছে ই-টিকিটিং ব্যবস্থা। মেলায় নতুন এ ব্যবস্থা পরিচালনা করছে ডিজি ইনফোটেক।
শনিবার মেলার মূল ফটকে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারের পাশাপাশি ই-টিকিটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা অনলাইনে কিংবা মোবাইলে কিউ আর কোড স্ক্যান করার মাধ্যমে টিকিট কেটে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। আবার ঘরে বসেই টিকিট কেটে মেলায় প্রবেশ করা যায়। ফলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার বিড়ম্বনা থেকে দর্শনার্থীদের মুক্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টিকিট কাটার সার্ভারে গোলযোগ থাকায় তারা স্ক্যান করার পরেও টিকিট কাটতে পারছেন না। আবার অনেক ভিড় থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কও ঠিক মতো কাজ করছে না। ফলে মেলায় প্রবেশে ই-টিকিটিং সুবিধার বদলে ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।
ইয়াজ মাহমুদ নামে এক দর্শনার্থী বলেন, পুরো পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছি। কুড়িল থেকে বিআরটিসি বাসে আসার যে ভোগান্তি তার থেকে মেলায় প্রবেশে আরও বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কাউন্টারে লম্বা লাইন দেখে ভাবলাম অনলাইনে টিকিট কাটি। কিন্তু সার্ভার সমস্যার কারণে তা আর সম্ভব হলো না। ফলে প্রায় ৩০ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে কাউন্টার থেকেই টিকিট কাটতে হলো।
এ বিষয়ে ডিজি ইনফোটেকের পরিচালক নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, এবার প্রথমবার হওয়ায় কিছু অনাকাক্সিক্ষত সমস্যা হচ্ছে। আবার শুক্রবার, শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ার কারণে চাপ বেশি। আশা করছি বুথ সংখ্যা বাড়ালেই এ সমস্যা অনেকটা কমে আসবে। তিনি আরও বলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই আবার ডিজিটাল ব্যবস্থায় অভ্যস্ত নয়। আবার যাদের স্মার্টফোন নেই তাদের কাউন্টার থেকেই টিকিট কাটতে হচ্ছে।
আহসান মাহমুদ নামে এক দর্শনার্থী বলেন, প্রথমবারের মতো অনলাইনে টিকিট কেটে বাণিজ্যমেলায় প্রবেশ করার ইচ্ছা ছিল। তবে অনলাইনে টিকিট কাটার দক্ষতা তেমন নেই তাই নিজে কাটতে পারিনি। পরে মেলার গেটে বুথ থেকে কেটে কিউআর কোড স্ক্যান করে প্রবেশ করেছি।
শনিবার সকালে মেলার গেটে দেখা যায়, কাউন্টারগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশের পরই ঢল নামে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েকদিন সে রকম দর্শনার্থী না হলেও শুক্র এবং শনিবার বহু মানুষ মেলায় এসেছে।
মাসব্যাপী এই মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন খোলা থাকছে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।