ছবিঃ সংগৃহীত
পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো’র উদ্যোগে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় এসএমই ফাউন্ডেশনের প্যাভিলিয়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
১ জানুয়ারি ২০২৫ মেলা উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মেলায় এসএমই ফাউন্ডেশনের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মহাব্যবস্থাপক নাজিম হাসান সাত্তার ও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন।
বাণিজ্য মেলায় এসএমই ফাউন্ডেশনের প্যাভিলিয়নে ১১জন উদ্যোক্তা তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। ফাউন্ডেশনের প্যাভিলিয়নে প্রদর্শিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, সিরামিক্স, তাঁত, কৃষি ও হস্তশিল্প পণ্য।
এবারের বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ করেছে বিশ্বের ৭টি দেশের ১১টি প্রতিষ্ঠানসহ ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। মাসব্যাপী মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, এসএমই উদ্যোক্তাদের বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে শতভাগ দেশী পণ্য নিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশন নিয়মিত জাতীয় ও আঞ্চলিক/বিভাগীয় এসএমই পণ্য মেলা আয়োজন করে। এ যাবত ১১টি জাতীয়, ৮৯টি আঞ্চলিক/বিভাগীয় এসএমই পণ্য মেলা, ৪টি হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল আয়োজন, এসএমই উদ্যোক্তাদেরকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় তাদের উৎপাদিত পণ্যসহ অংশগ্রহণে সহযোগিতা করে ফাউন্ডেশন। উদ্যোক্তাদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে সফল উদ্যোক্তাদের জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান ৩২ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র সবশেষ অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, দেশে ৭৮ লাখের বেশি কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা মোট শিল্প প্রতিষ্ঠানের ৯৯ শতাংশের বেশি। শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫% এসএমই খাতে। এই খাতে প্রায় আড়াই কোটিরও বেশি জনবল কর্মরত আছে। অধিক জনসংখ্যা এবং সীমিত সম্পদের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। এমএসএমই একটি শ্রমনিবিড় ও স্বল্প পুঁজিনির্ভর খাত।
উৎপাদন সময়কাল স্বল্প হওয়ায় জাতীয় আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এমএসএমই অবদান অনেক। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও সিএমএসএমই খাতের বিকাশ ও উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। বস্তুত বাংলাদেশকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন অনুঘটকের ভূমিকা রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ এসএমই নীতিমালা ২০১৯ এবং এসডিজি ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা।
জাফরান