ছবিঃ সংগৃহীত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে অস্বাভাবিক দামে রেমিট্যান্স কেনায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না, তা ব্যাখ্যা করতে বেশকিছু ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নির্দেশনা দিয়েছে।
সম্প্রতি এক চিঠিতে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত সপ্তাহ জুড়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনে ডলারের বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি উঠে আসে।
এর জের ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ব্যাংক খাতের কিছু ইমম্যাচিউর ট্রেডার বাজারকে অস্থিতিশীল করে ফেলেছে। ডলার মার্কেট ওপেন করে দেওয়ার সুযোগের অপব্যবহার করছে তারা। বাজারকে যারা অস্থিতিশীল করেছে, তাদের অবশ্যই শাস্তির দরকার আছে।
ব্যাংকগুলোকে দেওয়া চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এক্সচেঞ্জ রেট নিয়ে দেওয়া নির্দেশনায় ক্রলিং পেগ মিড রেট হিসেবে ১১৭ টাকাকে ভিত্তি রেখে ডলার কেনাবেচা করার জন্য ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছিল। অতিসম্প্রতি আপনাদের ব্যাংকের এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে রেমিট্যান্সের ডলার কেনার রেট কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশিত রেটের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এর কারণে দেশের ফরেন কারেন্সি মার্কেটে শৃঙ্খলা বজায় থাকছে না।
গত সপ্তাহে কিছু ব্যাংক এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর কাছ থেকে রেমিট্যান্সের ডলার বেশি সংগ্রহ করতে অস্বাভাবিক রেট অফার করছে। এর কারণে রেমিট্যান্সের ডলার বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রায় চার মাস স্থিতিশীল থাকার পর চলতি ডিসেম্বরের শুরু থেকে ডলারের বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। সর্বশেষ দুই কার্যদিবসে ডলার-টাকার বিনিময় হার দুই বার ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেটের নতুন রেকর্ড গড়েছে। গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে খরচ করতে হয়েছে সর্বোচ্চ ১২৭.৭০ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অনেক ব্যাংকই কম-বেশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষিত ডলারের রেট মানেনি। তবে কয়েকটি ব্যাংক বাজার অস্থির করার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে। আপাতত তাদের কাছেই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। চিঠি পাওয়া ব্যাংকের সংখ্যা ১০-১২টি হতে পারে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেক জন কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেওয়া আমাদের রুটিন কাজের অংশ। তারা রেমিট্যান্সের বাজার থেকে কীভাবে ও কী ধরনের রেটে ডলার সংগ্রহ করছে, এ সম্পর্কিত সব ধরনের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তাদের আদেশের ভিত্তিতেই আমরা ব্যাংকগুলোর কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছি। এই ব্যাখ্যা চাওয়া মানেই শাস্তি দেওয়া নয়। ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ব্যাখ্যা পাওয়ার পরই পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
রেমিট্যান্সের ডলারের দাম বাড়ার পেছনে ব্যাংকগুলোর দায় রয়েছে মন্তব্য করে ঐ কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিন ব্যাংকগুলো এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর কাছে রেমিট্যান্সের ডলারের চাহিদা ও রেট কোট করে।
এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো যে ব্যাংকের কাছে বেশি রেট পায়, তার কাছেই রেমিট্যান্সের ডলার বিক্রি করে। ব্যাংকগুলো অস্বাভাবিক রেট অফার না করলে এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোও মার্কেটে খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারে না।
রিয়াদ