.
বিশ্ববাজারে অবশেষে পাম তেলের দামে ঊর্ধ্বগতি থেমেছে। শুধু থামেইনি, বরং কমতেও শুর করেছে। গত দুই সপ্তাহে পণ্যটির দাম প্রায় ১৪ শতাংশ কমেছে। আর প্রতি টন হিসেবে কমেছে প্রায় ১৫০ মার্কিন ডলার। দাম কমার এই খবর বাংলাদেশের ক্রেতাদের জন্য স্বস্তির হতে পারে। কারণ, বিশ্ববাজারে দাম কমার পর দেশের পাইকারি বাজারেও পাম তেলের দাম ইতোমধ্যে কমতে শুরু করেছে। তবে খুচরায় দাম কোনো প্রভাব নেই।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে তিন সপ্তাহ আগে প্রতি লিটার পাম তেলের দাম সর্বোচ্চ ১৫৪ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। বৃহস্পতিবার সেই পাম তেল বেচাকেনা হয়েছে ১৪৩ টাকা লিটার দরে। খুচরা পর্যায়ে অবশ্য এখনো পুরোপুরি দাম কমার প্রভাব পড়েনি। পণ্য বিপণনকারী সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবে খুচরায় বর্তমানে প্রতি লিটার পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৬ থেকে ১৫৭ টাকায়। বাংলাদেশে প্রধান দুটি ভোজ্যতেল হচ্ছে সয়াবিন ও পাম। দুটি তেলের মোট আমদানির প্রায় ৭০ শতাংশই পাম তেল। মূলত খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং প্রসাধন ও কাপড় ধোয়ার ডিটারজেন্ট শিল্প এবং হোটেল-রেস্তোরাঁতেই পাম তেল বেশি ব্যবহৃত হয়। আবার সয়াবিনের চেয়ে কম দামের কারণেও এটি নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে প্রধান ভোজ্যতেল হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশে পাম তেল পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। বছরে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টন পাম তেল আমদানি হয়। এ তেল আমদানিতে বছরে দেশের প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাম তেল আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল ১৪৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকার বেশি (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে পণ্যটি আমদানিতে খরচ কমবে। তাতে ডলারের ওপরও কিছুটা চাপ কমতে পারে। মালয়েশিয়ায় উৎপাদন কম ও ইন্দোনেশিয়ায় আগামী জানুয়ারিতে বায়োডিজেলে পাম বীজের ব্যবহার ৫ শতাংশ বাড়বে, এমন আভাসের কারণে তিন মাস ধরে পাম তেলের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা গিয়েছিল।