রিহ্যাব ফেয়ার-২০২৪
আগামী ২৩ ডিসেম্বর রাজধানীতে বসছে সপ্তাহব্যাপী রিহ্যাব ফেয়ার-২০২৪। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) শুরু হতে যাওয়া এই মেলা থেকে ফ্ল্যাট ও প্লটের নানা তথ্য জানা যাবে, দেওয়া যাবে বুকিংও। পাওয়া যাবে ব্যাংক ঋণের সেবাও। ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা এ মেলায় ২২০ টি স্টল অংশ নেবে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) আয়োজিত রিহ্যাব ফেয়ার-২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রিহ্যাবের সভাপতি মো. ওয়াহিদুজ্জামান। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়াসহ সংগঠনটির সিনিয়র নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের ফেয়ারে ২২০টি স্টল থাকছে। এই ফেয়ারে আমরা ৫টি গোল্ড স্পন্সর, ১৮টি কো-স্পন্সর, ১৮ টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১০ অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানকে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিতে পেরেছি।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্ট এ. এফ. হাসান আরিফ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল ড. মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার (অব.)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ২৩ ডিসেম্বর সোমবার বেলা ৩ টায় বিআইসিসির হল অব ফেম-এ ফেয়ারের উদ্বোধনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। তবে প্রথম দিন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা উদ্বোধনীর পর থেকে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। বাকি দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ক্রেতা দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিগত সময়ের ধারাবাহিকতায় এ বছরের মেলাতেও দুই ধরনের টিকেট থাকছে। একটি সিঙ্গেল এন্ট্রি অপরটি মাল্টিপল এন্ট্রি। সিঙ্গেল এন্ট্রি টিকেটের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। আর মাল্টিপল এন্ট্রি টিকেটের প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা। মাল্টিপল এন্ট্রি টিকেট দিয়ে একজন দর্শনার্থী মেলার সময় ৫ বার প্রবেশ করতে পারবেন। এন্ট্রি টিকেটের প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ দুঃস্থদের জন্য কর্পোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটির (সিএসআর) কাজে ব্যয় করা হবে। এন্ট্রি টিকেটের র্যাফেল ড্র তে থাকছে আকর্ষণীয় মূল্যবান পুরস্কার। এ বছর মেলার শেষে প্রতিদিন রাত ৯ টায় রাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। রাফেল ড্র তে ৫ দিনেই থাকবে আকর্ষণীয় মূল্যবান পুরস্কার।
সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, আমরা শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করছি না। অর্থনীতিতে বড় ধরনের অবদান রাখছি। সরকারের রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান, রড, সিমেন্ট, টাইলসসহ ২০০ এর অধিক লিংকেজ শিল্প প্রসারের মাধ্যমে সমগ্র নির্মাণ খাত জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সমগ্র নির্মাণ খাতের অবদান প্রায় ১৫ শতাংশ। অর্ধকোটির অধিক শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল ২ কোটি লোকের অন্নের যোগান দিয়েছে। আমাদের আবাসন সেক্টর থেকে আয়কৃত অর্থ পুনরায় বিনিয়োগ হচ্ছে অন্য উৎপাদনশীল সেক্টরে। রড সিমেন্টের দাম কমলেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ আমাদের ডেভেলপার এবং বাড়ির মালিকরা বাড়ি তৈরি করছে না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আগে থেকেই নানামুখী সংকটে জর্জরিত আবাসন খাত। উচ্চ নিবন্ধন ব্যয় ও সুদের হার বৃদ্ধি এবং নতুন ত্রুটিপূর্ণ ও বৈষম্যমূলক ড্যাপের কারণে দেশে আবাসন খাতে বিনিয়োগ স্থবিরতা চলছে। এর ফলে বাড়ছে না কর্মসংস্থান। অসংখ্য লোকজন বর্তমানে বেকার। নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে সমস্যা হওয়াতে তলানিতে এসে ঠেকেছে ফ্ল্যাট তৈরি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এই মুহূর্তে আবাসন খাতের সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা নতুন বৈষম্যমূলক ড্যাপ। এমন বাস্তবতায় ২০২২ সাল থেকে নতুন বৈষম্যমূলক ড্যাপ এর কার্যক্রম শুরু হয়। আমরা বলেছিলাম ‘নতুন ড্যাপ এর কারণে মৌলিক চাহিদার অন্যতম আবাসনের স্বপ্ন মধ্যবিত্তদের নাগালের বাহিরে চলে যাবে’। ফার হ্রাসের কারণে মূল ঢাকায় বেশিরভাগ ভবন এর উচ্চতা কমে যাবে। ফলে আগামীতে আবাসন সংকট আরো প্রকট হবে। উচ্চহারে বাড়বে ফ্ল্যাটের দাম এবং আকাশচুম্বি হবে বাড়ি ভাড়া। আমাদের কথাগুলো ২ বছরেই সত্য প্রমানিত হয়েছে। আমরা রিহ্যাব এর পক্ষ থেকে দ্রুত ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) সংশোধন করে ২০০৮ এর বিধিমালা কার্যকর করার দাবি জানাই। ইতোমধ্যে ঢাকার জমির মালিকরাও ড্যাপ সংশোধনের দাবিতে মাঠে নেমেছেন।
আর কে