আলু-পেঁয়াজ। ফাইল ফটো
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ওরা আলু-পেঁয়াজ কী করে খায়-সেটা দেখিয়ে দিব। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নতুন মোড় নিয়েছে। ধীরে ধীরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। যার কারণে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় দ্রব্যমূল নিয়ে। খাদ্যপণ্য আমদানিতে অনেকটা বেশি নির্ভর করে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশে পেঁয়াজ এবং আলু রপ্তানিকারক বৃহত্তম দেশ হচ্ছে ভারত। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি প্রায় ৭.২৪ লাখ টনে পৌঁছেছে। যার মূল্য প্রায় ১৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগের বছরে এই রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬.৭১ লাখ টন।
এবার নির্ভরতা কমাতে বিকল্প পরিকল্পনা করছে পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ থেকে এই দুই পণ্য আমদানির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ডটকম মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নয়াদিল্লির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আলু ও পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রেও ভারতকে ছেড়ে নতুন সরবরাহকারী খুঁজছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) ইতোমধ্যে সম্ভাব্য বিকল্প উৎস হিসেবে চীন, তুরস্ক, জার্মানি, মিসর এবং স্পেনকে চিহ্নিত করেছে।
ইন্ডিয়া ডটকমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের চিনি আমদানির পর দেশটি এখন আলু এবং পেঁয়াজের জন্য অতিরিক্ত উৎসের অনুসন্ধান করছে। এর ফলে পাকিস্তান থেকে এই পণ্যগুলো কেনার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের।
গণমাধ্যমটি বলছে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর কথিত অত্যাচারের কারণে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং অতীতে আলু ও পেঁয়াজের প্রধান সরবরাহকারী ভারতের ওপর নির্ভরতা কমানোর জন্য বাংলাদেশের চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপটি নেওয়া হচ্ছে।
ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে তার আলু আমদানির জন্য ভারতের ওপর নির্ভর করে থাকে। আর পেঁয়াজ প্রাথমিকভাবে ভারত এবং মিয়ানমার থেকে নেয় বাংলাদেশ, তবে পাকিস্তান, চীন এবং তুরস্ক থেকেও কম পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করা হয় বাংলাদেশে। তবে ভারতীয় বাজারে ক্রমবর্ধমান দাম বাংলাদেশকে বিকল্প সরবরাহকারী খুঁজতে বাধ্য করেছে বলে জানা গেছে।
ইন্ডিয়া ডটকম বলছে, ভারত থেকে আলু না কিনে বিকল্প উৎস হিসেবে জার্মানি, মিসর, চীন এবং স্পেন থেকে এই আমদানি করার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের। একইসঙ্গে চীন, পাকিস্তান এবং তুরস্ক থেকেও পেঁয়াজ সংগ্রহ করা যেতে পারে বলে মনে করছে দেশটি।
বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম উদ্দিন বলেছেন, বিটিটিসি আলু ও পেঁয়াজের দাম ও সরবরাহ স্থিতিশীল করতে বিকল্প উৎস চিহ্নিত করেছে। আমরা আমদানিকারকদের এই বিকল্পগুলো বিবেচনা করার আহ্বান জানাব।
এসআর