ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১

গোটা দেশের অর্থনীতি খালি করে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ!

প্রকাশিত: ০৭:৩৭, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

গোটা দেশের অর্থনীতি খালি করে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ!

অর্থ পাচার।

গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দেশের আর্থিক ব্যবস্থা থেকেই ১৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে গেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ হয় এক লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা। এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

তবে অন্যান্য অর্থনীতিবিদের হিসাবে, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে, তা ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারের বেশি হতে পারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ হয় ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। যা বাংলাদেশের ২০২৪ - ২৫ অর্থবছরের বাজেট ৭৯ বিলিয়ন ডলার-এর অর্ধেকের কম।  

প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে স্থানীয় সময় বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাচার হওয়া অর্থের প্রকৃত পরিমাণ কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। বিভিন্ন ধরনের আর্থিক হিসাব - নিকাশ করে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, শেখ হাসিনার টানা তিন মেয়াদের শাসনামলে তার সহযোগীরা দেশের ব্যাংক খাত থেকে যে পরিমাণ অর্থ লুট করেছে, তা কার্যত পৃথিবীতে আর্থিক কেলেঙ্কারির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এতে দেশের অর্থনীতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, ফোকলা আর ফাঁপা হয়ে গেছে গোটা অর্থ ব্যবস্থা।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সাক্ষাৎকার কবে নেয়া হয়েছে তা নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়নি। তবে চলতি সপ্তাহে অর্থনৈতিক পরিস্থিতিবিষয়ক শ্বেতপত্র কমিটি বলেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে সার্বিকভাবে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে।

আহসান মনসুর নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, সর্বোচ্চ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরেছিল, লুটপাট করার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা হচ্ছে ব্যাংক। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো শত শত কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিভিন্ন কোম্পানিকে ঋণ দিয়েছে, যে কোম্পানিগুলোর অনেকগুলোর অস্তিত্বই নেই। এই টাকাও কখনো সম্ভবত ব্যাংকে ফিরে আসবে না; এই অর্থের একটি বড় অংশ দেশ থেকে অবৈধভাবে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নির্বাচিত হওয়ার আগে ২৭ বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) কাজ করেছেন আহসান মনসুর। তিনি বলেন, ব্যাংকের পুরো পরিচালনা পর্ষদ হাইজ্যাক করা হয়েছিল। তার ভাষ্য, বিশ্বের অন্য কোনো দেশে সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ এভাবে গুন্ডা–মাস্তানদের সহযোগিতায় পুরো ব্যাংক খাতে এমন পদ্ধতিগতভাবে ডাকাতি করেছে, এমন ঘটনা তিনি আর কোথাও দেখেননি।

সংবাদে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে এখনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার পালা অব্যাহত রয়েছে, গণসহিংসতাও দেখা যাচ্ছে। অর্থনীতি প্রসঙ্গে আহসান মনসুর বলেন, আগামী বছর অর্থনীতির আকাশে আরও ঝড় উঠবে; এরপর অর্থনীতির আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে।

সূত্রঃ নিউইয়র্ক টাইমস।

রিয়াদ

×