ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর প্রতিবেদন

অস্থিরতার পরও বেড়েছে পোশাক রপ্তানি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০৫, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

অস্থিরতার পরও বেড়েছে পোশাক রপ্তানি

পোশাক খাতে শুরু হয় অস্থিরতা

ন্যূনতম মজুরির দাবিতে গত বছরের জানুয়ারি থেকে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস পোশাক খাতে শুরু হয় অস্থিরতা। ইতোমধ্যে প্রায় দুই বছর হতে চলেছে, কিন্তু এখনো এই অস্থিরতা বন্ধ হয়নি। বিভিন্ন দাবিতে এখন ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরে চলছে শ্রমিক অসন্তোষ ও কর্মবিরতি। এসব সমস্যার পরও রপ্তানির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে পোশাক খাত। বরং আগের বছরের তুলনায় বেশ ভালোই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে বলে জানিয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। বুধবার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। 
ইপিবির তথ্যানুসারে, আগের বছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে মোট পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৭৮১ কোটি ৯ লাখ ডলার। তবে চলতি বছরের একই সময় পর্যন্ত এই রপ্তানির পরিমাণ ১ হাজার ৯৯০ কোটি ৬০ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত বছরের প্রথম পাঁচ মাসের চেয়ে চলতি বছরের এই সময়ে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২০৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার। এক্ষেত্রে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এ ছাড়া মাসভিত্তিক গত নভেম্বরে যেখানে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩৫৬ কোটি ২৯ লাখ ডলার, সেখানে চলতি বছরের নভেম্বরে এই রপ্তানির পরিমাণ ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসভিত্তিক শুধু নভেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ৫৫ কোটি ৬৭ লাখ ডলার বা ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৬১১ কোটি ৭১ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৪৩৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। এ ক্ষেত্রে আগের বছরের চেয়ে রপ্তানি বেড়েছে বেড়েছে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এ ছাড়া শুধু নভেম্বরে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩৩০ কোটি ৬১ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই মাসে ছিল ২৮৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। মাস হিসেবে চলতি বছরের নভেম্বরে এই রপ্তানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
পোশাক খাতের পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কৃষি পণ্য রপ্তানি। চলতে বছরের প্রথম পাঁচ মাসে এই খাতে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার। আগের বছরের চেয়ে এই রপ্তানি বেড়েছে ৩ কোটি ৮১ লাখ ডলার বা ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। তবে মাস হিসেবে গত নভেম্বরের চেয়ে চলতি নভেম্বরে রপ্তানি বেড়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ ডলার বা ১৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। গত নভেম্বরে যেখানে রপ্তানি হয়েছিল ৯ কোটি ৪৮ লাখ ডলার, সেখানে চলতি নভেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ১১ কোটি ডলার।
রপ্তানিতে তৃতীয় অবস্থানে ছিল চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি। চলতি বছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত এই খাতে মোট রপ্তানি হয়েছে ৪৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ৩ কোটি ২৯ লাখ ডলার বা ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ। তবে মাস হিসেবে গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ৩ লাখ ডলার।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা পাট ও পাটজাত পণ্য চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে ৩৪ কোটি ১৭ লাখ ডলার। আগের বছরের একই সময়ে এই রপ্তানি ছিল ৩৭ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। এই ক্ষেত্রে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। তবে মাস হিসেবে গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে চলতি বছরের নভেম্বরে এই খাতের রপ্তানি বেড়েছে। গত বছর নভেম্বরে যেখানে এই খাতের রপ্তানি ছিল ৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার, সেখানে চলতি বছরের নভেম্বরে এই রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। এ ক্ষেত্রে মাস হিসেবে রপ্তানি বেড়েছে ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
রপ্তানিতে পঞ্চম অবস্থানে থাকা হোম টেক্সটাইল খাতে আলোচ্য সময়ে আয় হয়েছে ৩২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। গত বছরের একই সময়ে এ খাতের রপ্তানি ছিল ৩১ কোটি ১১ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ০৩ শতাংশ। এ ছাড়া মাসভিত্তিক গত বছরের নভেম্বরে যেখানে রপ্তানি হয়েছিল ৫ কোটি ৯৫ লাখ ডলার, সেখানে চলতি বছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ১৮ লাখ ডলার বা ২০ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

×